বস্ত্র খাতে অবদানের পুরস্কার পাচ্ছে ১০ প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বস্ত্র খাতের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখায় দেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএসহ ১০ প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে সম্মাননা দিচ্ছে সরকার। জাতীয় বস্ত্র দিবসে উপলক্ষে গতকাল রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। আগামী ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এক অনুষ্ঠানে ১০ প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে পুরস্কার বিতরণ করা হবে।

পাটমন্ত্রী বলেন, বস্ত্র খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি, যুগোপযোগী করা ও বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে এ খাতের চাহিদা বাড়াতে ব্যাপক প্রচারের লক্ষ্যে ৪ ডিসেম্বর ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস’ উদযাপন করা হয়।

‘দেশীয় বস্ত্র ব্যবহার করি, সোনার বাংলা গড়ে তুলি’Ñপ্রতিপাদ্যে এবারের বস্ত্র দিবস উদযাপনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বস্ত্র খাতের উন্নয়ন, উৎকর্ষতা সাধন, বস্ত্র শিক্ষার সম্প্রসারণ ও রপ্তানি বাড়াতে ভূমিকা রাখায় ১০ সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানকে এবার সম্মাননা দেয়া হবে। আগামী ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বস্ত্র দিবসের মূল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে হবে পুরস্কার বিতরণ।

দেশের রপ্তানি আয়ের সিংহভাগ যে বস্ত্র খাত থেকে আসে, সে কথা তুলে ধরে বস্ত্রমন্ত্রী বলেন, দ্রুত সম্প্রসারিত এ শিল্প দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে। বর্তমানে বস্ত্র খাতে প্রায় অর্ধকোটি লোক কর্মরত। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই নারী। ফলে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নেও এ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বস্ত্র অধিদপ্তর সরকারি পর্যায়ে ৪১ টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, ১১টি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট এবং নয়টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মাধ্যমে স্বল্প খরচে বস্ত্র খাতের জন্য দক্ষ শ্রমিক, সুপারভাইজার, ডিপ্লোমা প্রযুক্তিবিদ সর্বোপরি স্নাতক পর্যায়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি বস্ত্র শিল্প খাতে সরবরাহ করছে। এছাড়া কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনবলের বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, বস্ত্র খাত দেশের সর্ববৃহৎ শ্রমঘন খাত। দেশীয় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, রপ্তানি ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

অর্থনৈতিক অবদান বিবেচনায় বস্ত্র খাত দেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত। বিজিএমইএ ২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যমানের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার বস্ত্র খাতের অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় করে এ খাতের উন্নয়নকে গতিশীল রাখার পাশাপাশি বস্ত্র অধিদপ্তর পোশাক কর্তৃপক্ষের সকল সেবা ওয়ানস্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে প্রদান করছে।

বস্ত্র খাতের উন্নয়নে সরকারের আরও পদক্ষেপ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে তৈরি পোশাক শিল্পে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি’ সংখ্যা বেড়ে ১৭১টি হয়েছে এবং এ ধরনের আরও প্রায় ৫০০টি শিল্প কারখানা ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি’ হিসেবে অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তাঁত শিল্পের উন্নয়ন ও তাঁতিদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে দেশের প্রান্তিক তাঁতিদের ঋণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

তাঁত পণ্যের নতুন নতুন ডিজাইন উদ্ভাবন, উদ্ভাবিত নতুন ডিজাইনের ওপর তাঁতিদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষতা ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাঁত বস্ত্রের উন্নয়নে ফ্যাশন ডিজাইন, ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় ১২০ একর জমির ওপর ‘শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী’ স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।

পুরস্কার পাচ্ছে যারা: বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়ার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপার্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল অ্যান্ড লিনেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিটিএলএমইএ), বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএ), বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ), বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ), বাংলাদেশ স্পেশালাইজড টেক্সটাইল মিলস অ্যান্ড পাওয়ার লুম ইন্ডাস্টিজ অ্যাসোসিয়েশন (বিএসটিঅএমপিআইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) ও বাংলাদেশ তাঁতি সমিতি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০