Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 1:03 pm

বস্ত্র খাতে ভর করে দুই দিন পর সূচকের উত্থান

মো. আসাদুজ্জামান নূর: চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই দিন পতনের পর গতকাল ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে সমান সংখ্যকের দর বৃদ্ধি ও হ্রাস পেয়েছে। এ কারণে প্রধান সূচকে ১৩ পয়েন্ট যোগ হলেও অন্য দুই সূচকে সামান্য হ্রাস পেয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে মুনাফার আশায় নির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগ প্রবণতা বেড়েছে। গতকাল বস্ত্র খাতে এ প্রবণতা বেশি দেখা গেছে।

পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান কভিড পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। অনেকে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমার সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন হ্রাস পেয়েছে আট শতাংশ।

গতকাল লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৪টির। দর হারিয়েছে ১৬২টি কোম্পানি। লেনদেন হয়েছে মোট এক হাজার ১১৭ কোটি টাকা। হাজার কোটি টাকা লেনদেনেও ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে ডিএসই। চলতি বছর ৩ জানুয়ারি থেকে যে হাজার কোটি টাকা লেনদেনে সূচনা হয়েছে, সেটি ১৫ কর্মদিবস ধরে অব্যাহত রয়েছে।

আগ্রহের শীর্ষে থাকা বস্ত্র খাতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এরপর রয়েছে যথাক্রমে বিবিধ ১৩ দশমিক ২৮, ওষুধ ও রসায়ন ১১ দশমিক ৮২, খাদ্য ৯ দশমিক ১৫, প্রকৌশল সাত দশমিক ৪১ এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাত দশমিক ০৯ শতাংশ। বাকি খাতগুলোর লেনদেন ছয় শতাংশের নিচে ছিল।

গতকাল লেনদেনের শুরুর পৌনে এক ঘণ্টায় সূচকের ব্যাপক উত্থান দেখা যায়। ওই সময় আগের দিনের তুলনায় ৫৯ পয়েন্ট বাড়ে ডিএসইএক্স সূচক। বেলা পৌনে ১১টার পরে শেয়ার কেনার বদলে বিক্রিতে মনোযোগী ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। উত্থানের ধারা কমতে শুরু করে, যা লেনদেনের শেষ সময় পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ফলে দিন শেষে ১৩ পয়েন্ট উত্থানে শেষ হয়েছে লেনদেন। টানা ৯ কর্মদিবসে সাত হাজার পয়েন্টে স্থির থেকে গতকাল সূচক দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৩২ পয়েন্টে।

চলতি সপ্তাহের রোববার ডিএসইর এই প্রধান সূচক সাত হাজার ১০৫ পয়েন্ট থেকে ৩২ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছিল সাত হাজার ৭৩ পয়েন্টে। সোমবারও সূচক কমেছিল ৫৩ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট। সপ্তাহের দুদিন সূচক কমেছে ৮৬ দশমিক ৭১ পয়েন্ট।

সূচক উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর দর বৃদ্ধি। লেনদেনে এদিন ৭২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। পাশাপাশি দর বৃদ্ধিতে ছিল প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলো। লেনদেনে এ খাতের ৫০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। সিমেন্ট খাতে তালিকাভুক্ত সাতটি কোম্পানির মধ্যে ৫৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।

গতকাল সূচক বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল আইসিবির, ১১ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে পাঁচ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এ ছাড়া ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর দশমিক ৪৭ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে তিন দশমিক ০২ পয়েন্ট। হাইডেলবার্গ সিমেন্টের সূচক বৃদ্ধিতে অবদান ছিল দুই দশমিক ৯৫ পয়েন্ট, স্কয়ার টেক্সটাইলের দুই দশমিক ৪৮ পয়েন্ট এবং বেক্সিমকো লিমিটেডের দুই দশমিক ৪৫ পয়েন্ট। এ ছাড়া সূচক বৃদ্ধিতে ভূমিকা ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, ইসলামী ব্যাংক, বসুন্ধরা পেপার মিলস, বিএসআরএম স্টিল ও বিএসআরএম লিমিটেড।

অন্যদিকে শেয়ারের দর পতনে সূচক কমাতে সহায়ক ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, গ্রামীণফোন, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল, ব্র্যাক ব্যাংক, লিন্ডে বিডি, সোনালী পেপার, বেক্সিমকো ফার্মা, বিকনফার্মা, রেনেটা ও ইউনিক হোটেল।