নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধিতে এখন আগের তুলনায় তৈরি পোশাকের দাম বাড়িয়েছেন ক্রেতারা। আবার তৈরি পোশাকের পাশাপাশি বস্ত্র খাতের পণ্য রপ্তানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডিজেল, কাঁচামাল ও পণ্য পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির তুলনায় তা বাড়ছে না। এ কারণে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে তৈরি পোশাকের উৎপাদন খরচ বাড়ছে পাঁচ শতাংশ।
এমন মন্তব্য করেছেন দেশের তৈরি পোশাক খাতের কারখানা মালিক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) নেতারা। গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে পোশাকশিল্পের বাজার সম্প্রসারণে কয়েকটি দেশের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতেই বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি জ্বালানি তেল ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। সেই অনুপাতে পণ্য পরিবহন, জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ও আনুষঙ্গিক কাঁচামাল এবং সেবার মূল্য বেড়েছে। এসব বিবেচনায় পোশাক উৎপাদন খরচ চার থেকে পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে।
বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনার কারণে প্রায় দুই বছরে তেমন কোনো কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি। এ অবস্থায় বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে ব্যবসা সহজীকরণ এবং নীতি স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। এমন পরিস্থিতিতে তেলের দাম বৃদ্ধি নয়, বরং কমানোর বিষয়ে সরকারকে বিবেচনায় নেয়া দরকার।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল ফেডারেশনের (আইএএফ) ৩৭তম সম্মেলন ঢাকায় হবেÑজানিয়ে তিনি বলেন, একক খাতের আন্তর্জাতিক সম্মেলন এটাই প্রথম হবে দেশে। ওই সম্মেলনে ‘মেড ইন ব্যাংলাদেশ উইক’ ব্র্যান্ডিং তুলে ধরে সপ্তাহব্যাপী একটি
আয়োজনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আগামী নভেম্বরে এ সম্মেলন হতে পারে বলে জানান তিনি।
বিজিএমইএ জানিয়েছে, পোশাকশিল্পের প্রসার, প্রচার এবং উন্নয়নে বিজিএমইএর প্রাণান্ত প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ সর্বদা অব্যাহত রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ সফর করেন। সফরকালে
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত সম্মেলনের (কপ২৬) ২৬তম অধিবেশনে যোগদান করেন।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, কপ২৬-এর আনুষ্ঠানিক ভেন্যুতে বাংলাদেশের একটি প্যাভিলিয়ন স্থাপন করা হয়, যেখানে আমরা বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বেশকিছু প্রমোশনাল ম্যাটেরিয়াল উপস্থাপন করি। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের টেকসই অগ্রগতির ওপর নির্মিত একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়; যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায়। এতে বাংলাদেশের সম্মান বাড়ে। তৈরি পোশাক খাত শুধু ৪০ লাখ লোকের নয়, এটি অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।