দেশের উন্নয়নে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে। এক জরিপে দেখা গেছে, আমাদের জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) ভূমিকা রয়েছে ১১ শতাংশ। এ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা প্রয়োজন।
কেননা, এ অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেশের দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব। সুতরাং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা আরও বাড়াতে হবে। সদ্যসমাপ্ত ১২তম সিটি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পুরস্কার অনুষ্ঠানে এ অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তরা।
ব্যবসা-বাণিজ্যে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য এ পুরস্কার দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সিটিগ্রুপের মানবকল্যাণ সংগঠন সিটি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৫ এপ্রিল রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের হাতে পুরস্কারটি তুলে দেওয়া হয়। এবার দুটি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশের ১৪ জন উদ্যোক্তা এ পুরস্কার পেয়েছেন।
ছয় ক্যাটাগরিতে ছয়জনকে বিজয়ী, চারজনকে প্রথম রানারআপ ও বাকি চারজনকে দ্বিতীয় রানারআপ পুরস্কার দেওয়া হয়। শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, শ্রেষ্ঠ নারী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, শ্রেষ্ঠ তরুণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, শ্রেষ্ঠ কৃষি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিভাগে ১২ জনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন নওগাঁর জিল্লুর রহমান। একই বিভাগে প্রথম রানারআপ বগুড়ার সাইদুজ্জামান সরকার। দ্বিতীয় রানারআপ বরগুনার মো. আজিজুল হক সিকদার। শ্রেষ্ঠ নারী উদ্যোক্তা বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন মুন্সীগঞ্জের রুমা আক্তার। প্রথম রানারআপ ঢাকার ফজিলাতুন নেসা। দ্বিতীয় রানারআপ চট্টগ্রামের রুবামা শারমিন।
শ্রেষ্ঠ তরুণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিভাগে বিজয়ী ঢাকার আশুলিয়ার উদ্যোক্তা রুবেল দেওয়ান। প্রথম রানারআপ গাইবান্ধার নারী উদ্যোক্তা মোছা. রহিমা খাতুন। দ্বিতীয় রানারআপ পুরস্কার গ্রহণ করেন পাবনার বেড়া উপজেলার মো. তাইফুর রহমান। শ্রেষ্ঠ কৃষি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিভাগে বিজয়ী সাতক্ষীরার সায়মা খাতুন। প্রথম রানারআপ দিনাজপুরের মো. আলতাফ হোসেন ও দ্বিতীয় রানারআপ শরীয়তপুরের মো. নুরুল আমিন সরদার।
শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেনটেশন (পপি) ও শ্রেষ্ঠ সৃজনশীল ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টার (ভার্ক)।
এসএমই খাতের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনকে ভূমিকা রাখার ওপর জোর দিয়েছেন অনেকে। এ জন্য দ্রুত একটি গবেষণা সেল গঠন করার কথা বলেছেন বক্তারা। অনুষ্ঠানে অবকাঠামো ও শিক্ষা খাতের বিনিয়োগে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানটিতে সভাপতি হিসেবে ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অর্থনীতি। গত কয়েক বছরে এসব উদ্যোক্তার পুঁজি ও আকার সমানভাবে বেড়েছে।