নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের বেশি হওয়া অভূতপূর্ব বলে মনে করছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের নতুন রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, উন্নয়ন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি জনগণের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করবে চীন। গতকাল পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে মন্ত্রীর দপ্তরে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের অবস্থান প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রায় ১২ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষকে নিয়ে বাংলাদেশ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে নিবিড়ভাবে ফ্যাসিলিটেটর (সমন্বয়কারী) হিসেবে কাজ করছে চীন। আশা করছি দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাস্ট্রদূত বলেন, বর্তমানে কর্ণফুলী টানেলসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পে সহায়তা করছে চীন। আগামীতে আরও নতুন মেগা প্রকল্পে অর্থায়ন করা হবে। চীন কভিড মোকাবিলা করছে। এরপরও বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী মাসে বাংলাদেশ বিজনেস সামিট অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে চীনের ব্যবসায়ীরা অংশ নেবেন। বাংলাদেশের অভীষ্ট ২০৪১ অর্জন, স্মার্ট বাংলাদেশ এবং সোনার বাংলা গঠনে সবসময় পাশে থাকবে চীন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আইসিটি খাতে ব্যাপক উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। এ খাতে চীন সহায়তা দেয়া হবে। সেই সঙ্গে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা হবে। চীনের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) বিষয়ে কোনো অগ্রগতি আছে কি না জানতে চাইলে ওয়েন বলেন, আমরা এই এগ্রিমেন্ট করতে প্রস্তুত আছি। এখন কিছু প্রক্রিয়াগত কার্যক্রম চলছে। তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পে চীনের অর্থায়ন প্রসঙ্গে বলেন, এ নিয়ে কাজ চলছে।
সাক্ষাৎ শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের সঙ্গে আলাপ আলোচনা হচ্ছে। চীনের সঙ্গে আমাদের যে বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে সিটি আরও ওপরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন চীনের রাষ্ট্রদূত। তিনি আরও বলেন, বন্ধুত্বের শ্রেষ্ঠ পরিচয় হলো ব্যবসা-বাণিজ্য ও সহায়তার নিয়ে পাশে দাঁড়ানো। সেটি করছে চীন। সেই সঙ্গে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীনের উন্নয়ন ও অগ্রগতি আমাদের উৎসাহিত করছে। আমরা পারস্পরিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং একসঙ্গে বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কথা বলেছি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের নতুন রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গত ২৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় আসেন। তিনি ঢাকায় চীনের ১৬তম রাষ্ট্রদূত হিসেবে সাবেক রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
