Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 10:22 am

বাংলাদেশে অস্ত্র বেচতে চায় তুরস্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে প্রতিরক্ষাসামগ্রী বিক্রির পাশাপাশি বৃহদায়তন প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী তুরস্ক। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত সাভাসগলু গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে মোমেনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন।

গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর মেভলুত সাভাসগলু সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্য, কভিড-১৯ ও বহুপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী। আমরা তুরস্কের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।’

মেভলুত সাভাসগলু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান সূর্য। আর সব দেশের জন্য বাংলাদেশ আজ মডেল। এশিয়া আর ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশ।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য, প্রতিরক্ষাসহ নানা খাতে বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ আছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

মেভলুত সাভাসগলু বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি নিকট ভবিষ্যতে আমাদের বাণিজ্য ২০০ কোটি ডলার হবে, যা গত বছর ছিল প্রায় ১০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশ বর্তমানে বিভিন্ন বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। তুরস্কের নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম এবং চীনের পরেই তুরস্কের অবস্থান। এ খাতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।’

প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার বিষয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তুরস্কের প্রতিরক্ষাপণ্যের গুণগত মান অত্যন্ত ভালো, দাম অত্যন্ত সুলভ এবং এগুলো কিনতে কোনো শর্ত আরোপ করা হয় না। আমি নিশ্চিত, বাংলাদেশ এই সুবিধাগুলোর সুযোগ নেবে।’

প্রতিরক্ষা খাতে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও যৌথ উৎপাদনে রাজি আছে তুরস্ক, এ কথা জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবকিছু তৈরি করি না, তবে ৭৫ শতাংশের বেশি আমরা উৎপাদন করি। এর কারণ হচ্ছে, এর আগে যখন সমস্যা চলছিল, তখন আমাদের বন্ধুরাও আমাদের প্রতিরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করেনি এবং সেজন্য আমরা বেশির ভাগ পণ্য নিজেরাই উৎপাদন করি।’

এ খাতে তুরস্ক অনেক বিনিয়োগ করেছে বলে জানিয়ে মেভলুত সাভাসগলু বলেন, ‘কয়েকটি দেশের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে পণ্য উৎপাদন করছি।’

রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ বিষয়ে যথেষ্ট করছে না। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুধু কথা শুনতে চাই না, আমরা কাজেও তার প্রতিফলন দেখতে চাই।’

এর আগে মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক হয় মেভলুতের।

গত সেপ্টেম্বরে আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসের নতুন ভবন উদ্বোধন করা হয়েছে এবং গতকাল তুরস্কের নতুন দূতাবাস ঢাকায় উদ্বোধন করা হয়। গতকাল বিকালে বারিধারায় নতুন দূতাবাস উদ্বোধন করেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

‘সবার জন্য মঙ্গলজনক’ এমন সময়ে বঙ্গবন্ধু ও কামাল আতাতুর্কের আবক্ষ মূর্তি দুই দেশে উšে§াচন করা হবে বলেও জানান মোমেন।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তুরস্ক সফরের সময় ওই দেশের প্রেসিডেন্ট সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব দেন, যার মধ্যে রয়েছে বিদ্যমান শুল্কবাধা এড়িয়ে নতুন পণ্য, বস্ত্র, ওষুধ ও অন্যান্য খাতের বিনিয়োগ। এছাড়া তুরস্কের আর্থিক সহযোগিতায় একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দের জন্য তুরস্কের রাষ্ট্রপতি প্রস্তাব দেন।.