বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রয়োজনে যেকোনো পদক্ষেপ নেবে যুক্তরাষ্ট্র: ম্যাথিউ মিলার

শেয়ার বিজ ডেস্ক:   বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন হলে যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। 

সোমবার (৩০ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশি সাংবাদিক জ্যাকব মিল্টনের এক প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার এ কথা বলেন।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট করেসপনডেন্ট মুশফিকুল ফজল আনসারীর এক প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে হামলা এবং সহিংসতার ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বানও জানান। 

মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, বাংলাদেশে বিরোধী দলের সমাবেশে হামলা এবং সহিংসতা নিয়ে আপনার বিবৃতিটি লক্ষ্য করেছি। পুলিশ অনেকটা পরিকল্পিতভাবেই এই হামলা চালিয়েছে। তারা সমাবেশের পূর্বে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির শত শত নেতা-কর্মীকে আটক করেছে, আটক থেকে বাদ পড়েনি বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যরাও। বিরোধী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে শত শত মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিকে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে দেখছে? 

জবাবে মিলার বলেন, ‘২৮ অক্টোবর ঢাকায় সংগঠিত রাজনৈতিক সহিংসতায় আমরা নিন্দা জানাই। পুলিশ সদস্য এবং রাজনৈতিক কর্মীর নিহত হওয়া, হাসপাতাল ও বাসে আগুন দেওয়া অগ্রহণযোগ্য। একইভাবে সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের ওপর হামলা অগ্রহণযোগ্য। আমরা কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাই তারা যেন ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে সহিংসতার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে এবং দোষীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসে। অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সকলের দায়িত্ব। ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, সুশীল সমাজ এবং মিডিয়া—এটা সকলের দায়িত্ব।’ 

অপর এক প্রশ্নে মুশফিক জানতে চান, সম্প্রতি বিরোধী দলের বিভিন্ন নেতা এবং ভিন্নমতের মানুষদের সঙ্গে বৈঠক করায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেছে সরকারের মদদপুষ্ট কিছু মিডিয়া এবং তাদের সমর্থকেরা। এই সব মিডিয়ার রিপোর্ট বলছে সরকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কূটনৈতিকদের ওপর নজরদারি করছে। যুক্তরাষ্ট্র কী এ ধরনের নজরদারি করার অনুমতি দেবে? 

জবাবে মিলার বলেন, ‘আমাদের কূটনীতিকদের বিস্তৃত পরিসরে যোগাযোগ করতে হয়—যেমন সুশীল সমাজ, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন সংগঠন এবং ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে হয়। এটা তাদের নিয়মিত কাজের অংশ এবং কূটনীতিকরা তাদের এই কাজ অব্যাহত রাখবেন।’ 

পরে জ্যাকব মিল্টন নামে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, গত ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে পুলিশের ইউনিফর্ম পরিহিত সশস্ত্র ক্যাডাররা পেট্রোল বোমা ও গানপাউডার ব্যবহার করে নিরীহ বেসামরিক মানুষকে হত্যা করে। এসময় সরকারি সম্পত্তির পাশাপাশি জনগণের সম্পত্তিও ধ্বংস করে। সেই ক্ষমতাসীন দল বলছে, বিরোধী দলের কর্মীরা ওই হামলা করেছে। তারা গত ১৪ বছর ধরেই এটি করছে। আমি মনে করি আন্তর্জাতিকভাবে সবাই স্বীকার করেছে, এ সমস্ত হামলা— সেটাকে সন্ত্রাসী হামলা বলুন বা যেটাই বলুন, ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডার ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ কিছু মানুষ করছে। আর তাই আমেরিকার কি তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার কোনও পরিকল্পনা আছে?

জবাবে  ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশ সম্পর্কিত পূর্ববর্তী প্রশ্নের উত্তরে আমি যা বলেছি তা এখানেও প্রযোজ্য। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সমর্থন করার জন্য প্রয়োজন হলে আমরা পদক্ষেপ নেব এবং আমি কখনোই সেগুলো নিয়ে আগে থেকে এখানে কথা বলব না।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০