Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 9:42 pm

বাংলাদেশে বিনিয়োগে শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র: শিল্পমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ স্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘ইউএস ট্রেড শো-২০২০’ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা জানান।

আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচেম) ও মার্কিন দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে তিন দিনের এ মেলার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জোয়ানে ওয়েগনার, অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৫২তম বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বাণিজ্য ঘাটতি ধীরে ধীরে কমে আসছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের ৯ শতাংশের বেশি হয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। গত অর্থবছরে এ বাণিজ্যের আকার ছিল ৯ দশমিক দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

শিল্পমন্ত্রী জানান, শিল্পনীতি ২০১৬-এ দেশের সর্বত্র বিশেষত রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিশেষ ইনসেন্টিভ ও সুবিধা রয়েছে। নীতিতে জ্বালানি, অবকাঠামো, যোগাযোগ, কৃষি ব্যবসা, আইসিটি, শিক্ষা, পর্যটন, রিয়েল এস্টেটসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রচুর সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে বাণিজ্য ব্যবস্থার উদারীকরণ করা হয়েছে এবং নন-শুল্ক বিধিনিষেধকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বৈচিত্র্যময় শিল্প খাতে বিদ্যমান বিশাল সম্ভাবনার সন্ধানের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। সে সঙ্গে রাসায়নিক, প্লাস্টিক, চামড়া, সিরামিক, অটোমোবাইল, খাদ্য এবং অন্যান্য অনেক শিল্প স্থাপনের কাজ চলমান।

শিল্পমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে দু’দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্য পারস্পরিক যোগাযোগ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান শিল্পমন্ত্রী। ইউএস ট্রেড শো দু’দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ পাশে আছে বলেই আমরা টেকনোলজিতে এগিয়ে যাচ্ছি। ট্রেড শোতে অনেক প্রতিষ্ঠান নতুন নতুন টেকনোলজি ও আইডিয়া নিয়ে এসেছে। আমাদের দেশের কোম্পানি আরএফএল, তারা নতুন একটি প্লাস্টিক তৈরি করেছে, যা হাইটেক এবং এটি তারা কম দামে বিক্রি করছে। হাইটেক পণ্য বাজারে আনতে হলে নতুন টেকনোলজির বিকল্প নেই।

গবেষণায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি মন্তব্য করে সৈয়দ এরশাদ বলেন, চীন কয়েক ধরনের পণ্য তৈরি করে। ওই সব পণ্য যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে রপ্তানি করে। এখন আমাদের ওইসব বাজারে ঢুকতে হলে জানতে হবে তাদের চাহিদা কী? কীভাবে যাব? এটি বের করতে হলে গবেষণা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছে, একক দেশের ওপর নির্ভশীল হলে চলবে না। তাই এখন থেকে আমাদের রপ্তানির বহুমুখীকরণের ওপর জোর দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে আয়োজকরা জানান, ট্রেড শোর ২৭তম এ আসরে ৪৬টি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করছে। শোর দ্বিতীয় দিনে ‘যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা’ ও ‘যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য’ এবং তৃতীয় দিনে ইউএসএইডের কর্মকাণ্ড ও ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ভিশন’ নিয়ে সেমিনার হবে।

তিন দিনব্যাপী এ ইউএস ট্রেড শো চলবে আগামীকাল পর্যন্ত।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা চলবে এ শো; প্রবেশ ফি ৩০ টাকা। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ফ্রি করা হয়েছে।