বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানিতে বড় পতন, আগস্টে কমেছে ২৮%

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারত থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি আগস্টে ২৮ শতাংশ কমে গেছে। এ মাসে বাংলাদেশে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে; যা গত বছরের আগস্টে ছিল ৯৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করা পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এ তথ্য দিয়েছে। সংবাদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিক্ষোভ ও সংঘাতের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট আরও গভীর হওয়ায় আগস্ট মাসে ভারতের রপ্তানি কমে গেছে।

এদিকে ঋণমান নির্ণয়কারী প্রতিষ্ঠান ক্রিসিল বলেছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি ভারতের বাণিজ্যের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি। তবে দেশটিতে অস্থিরতা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে তা ভারতের কিছু রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য আয় ও চলতি মূলধন ঘাটতির কারণ হতে পারে। বাংলাদেশ এসব শিল্পের জন্য চাহিদার অথবা উৎপাদনের কেন্দ্র। ভারত থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় তুলা। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আগস্টে ভারতের তুলা রপ্তানি প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে। ওই মাস পর্যন্ত রপ্তানির পরিমাণ ছিল বার্ষিক ১০০ কোটি ডলার, গত বছরের আগস্টে যা ছিল বার্ষিক ১১১ কোটি ডলার। বিক্ষোভের কারণে বাংলাদেশে পোশাকের ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ার মধ্যে ভারতের তুলা রপ্তানি পড়ে গেছে।

বাংলাদেশে পোশাক রপ্তানির ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে ভারতের বস্ত্রশিল্পে। এই শিল্প বাংলাদেশে কাঁচামাল ও অন্যান্য পণ্য পাঠায় পোশাকশিল্পে ব্যবহারের জন্য। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, কিছু বিদেশি ক্রেতা পোশাক কেনার বিষয়ে দেশটির বস্ত্র কারখানার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও বাংলাদেশে সুতা রপ্তানিতে পতনের ধারা শুরু হয়েছে। ক্রিসিল বলছে, শিল্প অথবা খাত রপ্তানি আয়ের ওপর কতটা নির্ভরশীল, প্রভাবের মাত্রা তার ওপর নির্ভর করবে। ভারতের করপোরেট জগতের ঋণমানের ওপর অতি নিকটে এর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে প্রতিষ্ঠানটি মনে করে না। এ বিষয় এবং বাংলাদেশি টাকার মান কী দাঁড়ায়, সেদিকে নজর রাখা দরকার হবে বলে জানায় ক্রিসিল।

প্রতিষ্ঠানটির ধারণা, বাংলাদেশের ঘটনাবলি তুলা জাত সুতা, বিদ্যুৎ, পাদুকা, সফট লাগেজ এবং দ্রুত বিক্রয় হয়, এমন পণ্যের ওপর ছোটখাটো প্রভাব রাখবে। তবে জাহাজভাঙা শিল্প, পাট এবং তৈরি পোশাকশিল্প এর ফলে সুবিধা পাবে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য খুব বেশি নয়। গত অর্থবছরে ভারতের মোট রপ্তানির ২ দশমিক ৫ শতাংশ গেছে বাংলাদেশে, আর আমদানির মাত্র শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ এসেছে প্রতিবেশী দেশটি থেকে। রপ্তানি করা পণ্যের মধ্যে ছিল তুলা ও তুলাজাত সুতা, পেট্রোলিয়াম পণ্য, বিদ্যুৎ ইত্যাদি। অন্যদিকে ভোজ্যতেল, সামুদ্রিক পণ্য ও পোশাক ছিল আমদানির তালিকায়।

ক্রিসিল বলছে, ভারতীয় কোম্পানিগুলোর পরিচালন মুনাফা বাংলাদেশের কারণে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কারণ, তুলা-সুতা থেকে লাভের হার খুব বেশি নয়। তবে দ্রুত বিক্রি হওয়া পণ্যের উৎপাদক ও সফট লাগেজ খাতের ওপর প্রভাব বেশি হবে। এর কারণ, এসব কোম্পানির উৎপাদন ব্যবস্থা বাংলাদেশেই অবস্থিত। ক্রিসিলের তৈরি করা এক নোটে বলা হয়েছে, এসব কারখানা সংকটের শুরুর দিকে পরিচালন সমস্যার মধ্যে পড়েছিল। বেশির ভাগই অবশ্য আবার উৎপাদনে ফিরে গেছে। তবে কারখানা পূর্ণ সক্ষমতায় চালানো ও কাঁচামালের সরবরাহ বজায় রাখা এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও অন্যান্য প্রকল্পে নিয়োজিত প্রকৌশল, পণ্য কেনাকাটা ও নির্মাণ খাতের কোম্পানিগুলোর কর্মকাণ্ড শুরু বিলম্ব হতে পারে। এর কারণ হিসেবে ক্রিসিল বলছে, এসব কোম্পানির কর্মীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এক মাসের বেশি আগে ভারতে চলে গেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০