বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক : র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারকে ডেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, এ নিষেধাজ্ঞা দুঃখজনক। গতকাল শনিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘চির অম্লান বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটা নতুন ঢং। যে কোনো অভিযোগ তথ্যভিত্তিক হওয়া উচিত। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ছয় লাখ লোক নিখোঁজ হয়। তাদের মতো পরিপক্ব গণতন্ত্রের দেশ থেকে এটা কাম্য নয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দুঃখজনক। ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি নিজেও সারপ্রাইজড। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব শান্তিতে ছিলাম। মালয়েশিয়া থেকে শ্রমবাজার নিয়ে সুখবর পেলাম। কিন্তু রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রদূত আমাকে ফোন করে জানালেন, বাইডেন প্রশাসন র‌্যাবের কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তারা আমাদের দেশের একটি প্রতিষ্ঠানকে লিস্টেড করেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। এগুলো লোক দেখানো, মোর ফ্যাক্ট বেইজড না।’

মোমেন বলেন, ‘আমেরিকা একটা পরিপক্ব দেশ। ওখানে অনেক পণ্ডিত লোক থাকে। তারা অনেক প্রগেসিভ আইডিয়া দেয়। কিন্তু সেটা মোর সলিড ফ্যাক্ট-বেইজড হতে হবে। তারা নিজেদের দেশে এবং বাইরে অনেকগুলো অ্যাকশন নিয়েছে, যেগুলোতে পরে দেখা যায় তারা লাভবান হয়নি।’

শুক্রবার মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে র‌্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ রয়েছেন। তিনি এখন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। বেনজীর আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার আওতায়ও পড়েছেন তিনি।

এছাড়া র‌্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।

র‌্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ডাকা হয়েছে জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘এটা পাওয়ার পর সকালে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নিয়েছি। আমাদের পররাষ্ট্র সচিব ওনার সঙ্গে বৈঠক করেছে। উনি (রাষ্ট্রদূত) অনেকটা বিস্মিত। দেখি কী হয়।’

র‌্যাবের কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে কি নাÑএমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘মনে হয় না। তবে সেটা নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর।’

ভূ-রাজনীতির কারণে এটা হলো কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হতে পারে। কী হচ্ছে এটা আমরা বিবেচনা করব। দেখা যাক কী হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের ডাক না পাওয়া প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ‘গণতন্ত্র বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে প্রতিফলিত হয়। সব দেশেই সব দিক বিবেচনায় গণতন্ত্র পুরোপুরি ফিট, সেটা বলা যায় না। তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) নিজের দেশেই গণতন্ত্র ঠিক রাখতে পারে না।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০