Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 10:21 pm

বাংলাদেশে শিল্পকেন্দ্র গড়ার প্রস্তাব জাপানের

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে একটি শিল্পকেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছে জাপান, যেখানে বন্দর ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়ে ভারতের স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানে পণ্য সরবরাহের ‘সাপ্লাই চেইন’ তৈরি করা যাবে।

গত মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার ভারত সফরের পর এ প্রস্তাব এলো। সেখানে তিনি বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চল এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিয়ে নতুন একটি শিল্পকেন্দ্র গড়ার ভাবনার কথা বলেন, যা ৩০ কোটি মানুষের এ অঞ্চলের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

কিশিদার ওই সফরের পর তার সরকার বাংলাদেশে তিনটি অবকাঠামো প্রকল্পে ১২৭ কোটি ডলার দেয়ার অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দরও রয়েছে, যেখান থেকে ত্রিপুরাসহ ভারতের স্থলবেষ্টিত রাজ্যগুলো এবং আরও বড় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য পরিবহন সম্ভব।

ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোশি সুজুকি মঙ্গলবার ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় ভারতীয়, বাংলাদেশি এবং জাপানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে শিল্পকেন্দ্র গড়ে তোলার ওই প্রস্তাব দিয়ে বলেন, ‘এটা ভারত ও বাংলাদেশ সবার জন্যই লাভজনক হতে পারে।’

তিনি বলেন, মাতারবাড়ির গভীর সমুদ্রবন্দর ২০২৭ সাল নাগাদ চালু হতে পারে। আর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে যুক্ত করে একটি শিল্পকেন্দ্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ বন্দর মূল ভূমিকা রাখতে পারে। 

ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিশান রেড্ডি বৈঠকে জাপানের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, এ পরিকল্পনা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে এবং জাপান ও অন্যান্য দেশের বিনিয়োগ আনতে সহায়ক হতে পারে।

নির্মাণাধীন মাতারবাড়ি বন্দর হবে বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর, যেখানে বড় আকারের জাহাজ ভিড়তে পারবে।

ওই সমুদ্রবন্দর থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের মতো। ফলে এ বন্দর আঞ্চলিক রপ্তানিকারকদের জন্য একটি প্রবেশদ্বার হয়ে উঠতে পারে বলে মন্তব্য করেন দুই দিনের এ বৈঠকের আয়োজক, গবেষণা সংস্থা এশিয়ান কনফ্লুয়েন্সের প্রধান সব্যসাচী দত্ত।

এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার পাল্টায় দেশটির মাল্টি বিলিয়ন ডলারের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফ্রিকাজুড়ে যৌথভাবে বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্প গড়ে তুলছে ভারত ও জাপান।

রাষ্ট্রদূত সুজুকি বলেন, ইতোমধ্যে তিনশর বেশি জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে কাজ করছে। দুই দেশ শিগগিরই একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি সই করবে বলে আশা করা হচ্ছে; যা বাংলাদেশে শিল্প উৎপাদন আরও বাড়াবে এবং আরও বিদেশি কোম্পানিকে আকর্ষণ করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ থেকে ২৮ এপ্রিল জাপান সফর করবেন বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।