সোহেল রহমান: বাংলাদেশের সমুদ্রবক্ষে যৌথভাবে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ‘সান্টোস বাংলাদেশ লিমিটেড’ (এসবিএল)-এর সঙ্গে ‘ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি’ (সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট) করতে যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) লিমিটেড’। সমুদ্রবক্ষে ১৬ নম্বর ব্লকের ‘মগনামা এক্সপ্লোরেশন অঞ্চলে’ এ অনুসন্ধান চালানো হবে। যৌথ অংশীদারির ভিত্তিতে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে সাঙ্ক কস্ট ও মগনামা অনুসন্ধান কূপ-২ খনন বাবদ এ খাতে বাপেক্সকে এককালীন দুই কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ২৩১ কোটি টাকা। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সমুদ্রবক্ষের ১৬ নম্বর ব্লকে ‘দ্বিতীয় বিডিং রাউন্ডে’র জন্য ১৯৯৪ সালের ৫ মে ‘উৎপাদন-বণ্টন চুক্তি’ (পিএসসি) সই হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, বর্তমানে এখানে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠান ‘সান্টোস সাঙ্গু ফিল্ড লিমিটেডে’র (এসএসএফএল) শেয়ার ৫০ শতাংশ এবং ‘সান্টোস বাংলাদেশ লিমিটেডে’র (এসবিএল) শেয়ার ৫০ শতাংশ। কিন্তু সম্প্রতি এসবিএল এ অঞ্চলে যৌথভাবে তেল-গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধানের জন্য বাপেক্সকে একটি প্রস্তাব পাঠায়। প্রস্তাবে বাপেক্স সম্মত হলে এসবিএল তাদের ৫০ শতাংশ শেয়ারের ৪৯ শতাংশ হস্তান্তর করবে বলে জানায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত চুক্তি সই হলে এতে অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানির শেয়ার হবে ৫০ শতাংশ, বাপেক্সের ৪৯ শতাংশ ও ‘সান্টোস বাংলাদেশ লিমিটেডে’র (এসবিএল) শেয়ার হবে ১ শতাংশ।
সূত্র জানায়, শেয়ার হস্তান্তরে এসবিএল প্রথমে চার কোটি ছয় লাখ ডলার (৩২৪ কোটি আট লাখ টাকা) দাবি করেছিল। এর মধ্যে সাঙ্ক কস্ট ৯২ মিলিয়ন ডলারের ২৫ শতাংশ ও মগনামা-২ কূপ খনন বাবদ ৩৫ মিলিয়ন ডলারের ৫০ শতাংশ ধরা হয়েছিল। পরবর্তী সময় নেগোশিয়েশনের মাধ্যমে সাঙ্ক কস্ট ৯২ মিলিয়ন ডলারের সাড়ে ১৭ শতাংশ ও কূপ খননের সংশোধিত ব্যয় ২৬ মিলিয়ন ডলারের ৪৯ শতাংশ বাপেক্স দেবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে বাপেক্সের ৩৭২তম বোর্ড সভায় যৌথভাবে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ২৩১ কোটি টাকা বিনিয়োগের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের ৩১ তারিখের মধ্যেই বাপেক্সকে এ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। তবে অস্ট্রেলিয়ান প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের আগে ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। এ লক্ষ্যে চুক্তির চূড়ান্ত খসড়াসহ একটি প্রস্তাব গত ১ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত ১৬ নম্বর ব্লকের অন্য অংশটি হচ্ছে: ‘সাঙ্গু প্রোডাকশন এরিয়া’। কিন্তু সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রের অপারেশন আর্থ-কারিগরি দিক বিবেচনায় অলাভজনক হওয়ায় ২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে এখানে গ্যাস উৎপাদন স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।
Add Comment