বাংলাদেশে সুষ্ঠ নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড রয়েছে। সেই অনুযায়ী নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে জনগণের অংশগ্রহণও জরুরি।

গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিকাব টক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পিটার হাস এসব কথা বলেন। ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন পরিচালনার স্বার্থে তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আনুষ্ঠানিক না হলেও বাংলাদেশে যে নির্বাচনের প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে, পত্রিকায় চোখ বুলালেই সেটা দেখতে পাই।

তিনি বলেন, এখন থেকেই (নির্বাচনের বিষয়ে) আমাদের দিক থেকে অবাধ, সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন হচ্ছে কি না সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখাটা জরুরি।

গত ১০ ডিসেম্বর র‌্যাব ও এর কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা দুটি জিনিস চাই; একটি হচ্ছে দায়বদ্ধতা ও আরেকটি সংস্কার।’ দায়বদ্ধতা নিশ্চিত হলে অপরাধীরা পার পাবে না এবং সংস্কারের মাধ্যমে পরিবেশ উন্নত করা সম্ভব বলে তিনি জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এটি এমন নয় যে আমরা একটি তালিকা দিলাম কী করতে হবে। সেটির থেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ওই দুটি নীতিকে সমুন্নত রাখা।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, জবাবদিহি নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানবাধিকার আইন মেনে চলা ছাড়া র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই।

পিটাস হাস বলেন, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে রয়েছে। সে কারণে মানবাধিকার রক্ষায় আমরা কোনো প্রকার ছাড় দিই না।

পিটার হাস বলেন, ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন এবং এ বিষয়ে আমরা প্রকাশ্যে এবং গোপনে বলে থাকি।’

বিপদের মধ্যেও পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন এবং অন্যান্য আইন নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।’

শ্রীলঙ্কার চলমান অর্থনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশও এ ধরনের ঋণের ফাঁদে পড়তে পারে, এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পিটার হাস বলেন, ‘দুই দেশের পরিস্থিতির মধ্যে কোনো মিল নেই। শ্রীলঙ্কার থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি অনেক বেশি দৃঢ়। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, বিদেশি ঋণের পরিমাণ সন্তোষজনক।’

চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশ কম পরিমাণ ঋণ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার যে ঋণ নেয়, সেটি অনেক কিছু বিবেচনা করে গ্রহণ করে।’ তবে তার মানে এই নয় যে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ নেই। তবে শ্রীলঙ্কার সমস্যা ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ এক ধরনের নয় বলে তিনি জানান।

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অনেক সফলতা অর্জন করেছে এবং বর্তমানে অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে উল্লেখ করে তিন মাস ধরে বাংলাদেশে কর্মরত পিটার হাস বলেন, ‘আমি শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে যাব, কনসালটেশনের জন্য। সেখানে আমার বিভিন্ন জনের সঙ্গে বৈঠক হবে।’

বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, শ্রমাধিকারসহ আরও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে বাংলাদেশের।’

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বন্ধু ও গত ৫০ বছর ধরে যে সহযোগিতা ছিল, সেটি সামনের ৫০ বছরও অব্যাহত থাকবে বলে জানান মার্কিন দূত।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০