বাংলাদেশ ও আদানিকে নিজেদের মধ্যে বসে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ ভারতের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে বসে বিদ্যুতের বকেয়া-বিষয়ক সমস্যা সমাধানে আদানি গোষ্ঠীকে পরামর্শ দিয়েছে ভারত। গত বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জ্যাসওয়াল এ পরামর্শ দিয়েছেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ব্রিফিংয়ের বিবরণী অনুসারে, দ্য হিন্দুর সাংবাদিক গড্ডায় আদানির প্রকল্পের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ক্রয় চুক্তি পর্যালোচনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কথা ইঙ্গিত করে জানতে চান, আপনি কি মনে করেন আদানি গ্রুপের সঙ্গে প্রকল্পটি পর্যালোচনা করার অধিকার বাংলাদেশ সরকারের রয়েছে? এছাড়া আপনি কি মনে করেন, এটি ভারত সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়ার লঙ্ঘন হবে?

জবাবে মুখপাত্র বলেন, আপনি যেটি উল্লেখ করছেন, তা একটি বেসরকারি প্রকল্প। এটি দুই পক্ষের মধ্যে ক্রেতা-বিক্রেতার চুক্তিতে আবদ্ধ। একটি পক্ষ যেটি ভারতীয় ও অপর পক্ষ বাংলাদেশি। তাই এ চুক্তি থেকে তারা কী চায়, তা উভয় পক্ষেরই সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়। এটি একটি ক্রেতা-বিক্রেতাÑএটি একটি বেসরকারি লেনদেনের বিষয়। সুতরাং তারা যদি এই বিশেষ লেনদেনের চুক্তিতে থাকেন, তবে তাদের বসতে হবে এবং সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে।

বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাদেশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী আদানি পাওয়াসহ ভারতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পর্যালোচনা করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছিলেন, ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ করে আদানি গ্রুপের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হবে; কী ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, এর শর্তগুলো কীÑএসব নিয়ে। কারণ বিদেশি কোনো কোম্পানি বাংলাদেশের আইন অমান্য করতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, এই তদন্তের মূল লক্ষ্য ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো নয়, বরং বাংলাদেশ আসলে আদানি পাওয়ারকে কত টাকা দিচ্ছে, সেটা যৌক্তিক কি না, সেসব প্রশ্নের জবাব খোঁজা হবে।
উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের আদানি গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ার। ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ও আদানি পাওয়ার (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেডের (এপিজেএল) মধ্যে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি হয়। ২৫ বছরের জন্য এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) স্বাক্ষর করে তারা। চুক্তির আওতায় বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিতে ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে আদানি পাওয়ার। এখনও সেখান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছে ঢাকা।

গত ৯ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আদানি বাংলাদেশকে বকেয়া ৫০০ মিলিয়ন ডলার না পাওয়ার কথা জানিয়েছে। এদিকে ব্রিফিংয়ে অপর এক সাংবাদিক ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে ট্রানজিট-সংক্রান্ত ত্রিপক্ষীয় চুক্তির বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, আপনি জানেন, বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য এই বিশেষ ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি কিছুদিন আগে করা হয়েছিল। এটির সঠিক কার্যকারিতা, প্রযুক্তিগত বিবরণ প্রভৃতি নিয়ে আমি এখনই আপনাকে আপডেট দিতে পারছি না। তবে আমার মনে হয়, এই বিশেষ চুক্তিটি চলমান রয়েছে এবং এটি কাজ করছে। তবে আমি এই বৈঠক শেষে শিগগিরই আপনাকে আপডেট জানাব।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০