শেয়ার বিজ ডেস্ক: বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) প্রাইমারী টেক্সটাইল সেক্টরের সর্ববৃহৎ সংগঠন । এ সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত ৫১৯টি স্পিনিং মিল, ৯৩০টি উইভিং মিল এবং ৩২২টি ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং মিল । গত চার দশকে এ খাতে মোট বিনিয়োগের পরিমান প্রায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ আড়াই লক্ষ কোটি টাকার অধিক যা এককখাত হিসেবে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ।
জিডিপিতে টেক্সটাইল এবং অ্যাপারেল সেক্টরের অবদান প্রায় ১৩% । গত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৬% টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল সেক্টর থেকে অর্জিত হয়েছে যাতে বিটিএমএ সদস্যরা প্রায় ৭০% এর যোগানদাতা । বর্তমানে বিটিএমএ’র সদস্য মিলগুলি তৈরি পোশাক শিল্পের মধ্যে নিট খাতের প্রয়োজনীয় সুতার প্রায় ৯০% এবং উইভিংয়ে ৪৫% সরবরাহ করছে ।
এছাড়াও বিটিএমএ এর সদস্য মিলগুলো ডেনিম, হোম টেক্সটাইল ও টেরি টাওয়ালের শতভাগ দেশীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি আয়ে) ব্যপক অবদান রাখছে । উল্লেখ্য, বিটিএমএ এর সদস্য মিলগুলো কতৃক তৈরিকৃত ডেনিম পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যাপকভাবে সমাদৃত ।
আপনারা জানেন দেশের অর্থনীতিতে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল সেক্টরের অবদান অপরসিীম, কিন্তু দুঃখের বিষয় এ সেক্টরটি বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে জ্বালানি সংকটের জন্য স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না । বিগত কয়েক মাস যাবত তীব্র গ্যাস সংকটের কারনে মিলগুলি তাদের উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র ৪০-৫০% এর বেশী ব্যবহার করতে পারছে না ।
ফলশ্রুতিতে সুতা ও কাপড়ের উৎপাদন ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়ায় উৎপাদন খরচ প্রায় দ্বিগুন হওয়ায় প্রতিযোগী দেশগুলোর সাথে এ সেক্টরের প্রতিযোগিতার সক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করছে যার প্রভাব তৈরী পোশাক রপ্তানিতে প্রতিফলিত হচ্ছে । টেক্সটাইল শিল্পে উৎপাদন খরচ বাড়াতে আমাদের স্থানীয় বাজারও বিদেশীদের হাতে চলে যাচ্ছে।
বর্তমানে টেক্সটাইল শিল্প যে বিষয়গুলিকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করছি তা হলঃ
১. গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের সংকট এবং প্রায় ২৫০% মূল্য বৃদ্ধি ।
২. ইডিএফ ফান্ডের পরিমাণ ৩০ মিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ২০ মিলিয়ন ডলার করন এবং অধিকাংশ ব্যাংকের এই ২০ বিলিয়ন ডলার ব্যায়েও অনীহা।
৩. ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১৪.৫% হওয়া যা পূর্বের তুলনায় ৪৮-৬৬% বৃদ্ধি পেয়েছে।
৪. শ্রমিক মজুরী ৭০% বৃদ্ধি ।
৫. ডলার সংকটের কারনে ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের প্রায় ৪০% ঘাটতি এবং তুলা ও অন্যান্য কাঁচামাল আমদানিতে এলসি খুলতে ব্যাংকের অনীহা উল্লেখযোগ্য।
