Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 7:07 pm

বাংলাদেশ থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলারের সেবা ও পণ্য কিনেছে হুয়াওয়ে

হুয়াওয়ে বিশ্বের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। বিশ্বব্যাপী আইসিটি অবকাঠামো ও স্মার্ট ডিভাইস সরবরাহকারী শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিতকরণ ও উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি উন্নত ও সংযুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলা এর উদ্দেশ্য। হুয়াওয়ে একটি পরিপূর্ণ আইসিটি সমাধান পোর্টফোলিও প্রতিষ্ঠা করেছে। বিশ্বব্যাপী ৫০০টির বেশি মোবাইল ফোন অপারেটরের প্রায় তিন বিলিয়ন গ্রাহককে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক পণ্য, সমাধান ও সেবা দিচ্ছে। ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বিশ্বের ১০০ রাজধানীতে ৩৬০টি এলটিই বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক নির্মাণের মাধ্যমে হুয়াওয়ে টেলিকম-শিল্পে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১৭০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে সেবা দিচ্ছে, যা বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার সমান। এক লাখ ৮০ হাজার কর্মী নিয়ে ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সমাজ তৈরির লক্ষ্যে হুয়াওয়ে কাজ করে চলেছে। এই বিশালসংখ্যক কর্মী বিশ্বব্যাপী টেলিকম অপারেটর, উদ্যোক্তা ও গ্রাহকের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
২০১৮ সালে মোট ক্রয়ের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে হুয়াওয়ে। এতে দেখা গেছে, শুধু বাংলাদেশের বাজার থেকে তারা ২৯ দশমিক তিন মিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ পণ্য ও সেবা কিনেছে। আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে এর পরিমাণ ৬০৮ মিলিয়ন ডলার। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলে ক্রয় করা মোট মূল্য দুই দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন ডলার। সমন্বিতভাবে সার্বিক প্রশাসনিক সেবা, প্রকৌশল পরিষেবা ও পণ্য কেনার মোট পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
২০১৯ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের জন্য এ বাজেট ৬৫২ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। সম্ভাবনাময় এ পরিসংখ্যানটি ব্যাংককের কনরাড হোটেলে হুয়াওয়ের ২০১৯ এসইএ কোর পার্টনার সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের মূল বিষয়বস্তু ছিল ‘উš§ুক্ততা, স্বচ্ছতা, সাফল্য ভাগাভাগি
করার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা’। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ৪০০’র বেশি প্রতিনিধিকে একত্রিত করেছেÑযারা প্রায় এক হাজার ৯০০ পণ্য ও সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতিনিধিরা বিভিন্ন শিল্প খাত যেমন উৎপাদন, সরবরাহ, প্রকৌশল পরিষেবা, এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক, বিপণন প্রভৃতি কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে।
গত তিন বছরে হুয়াওয়ের সহযোগিতায় এক হাজার ৯০০’র বেশি সহযোগী ৪৫ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। এ অঞ্চলের এক লাখ ২৫ হাজারের বেশি টেলিকম প্রকৌশলীকে প্রশিক্ষিত করেছে, যাদের মধ্যে ৯৮ হাজারের বেশি প্রকৌশলী পেশাদার সার্টিফিকেট পেয়েছেন। হুয়াওয়ে তার মূলধারার অংশীদারদের জন্য ৩০০’র বেশি কোয়ালিটি সিস্টেম পরিদর্শন সম্পন্ন করেছে, যা ১৩০টির বেশি কোম্পানিকে আইএসও বা অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সার্টিফিকেট পেতে সহায়তা করেছে।
হুয়াওয়ের সাউথইস্ট এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট জেমস উ বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া একটি উদীয়মান বাজার। হুয়াওয়ে ও তার অংশীদাররা একে অপরের পরিপূরক। শিল্পক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ও পারস্পরিক সহযোগিতা নিশ্চিত করে চলেছি আমরা। তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বের সব মানুষ, বাসস্থান ও প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল সেবার আওতায় নিয়ে আসা। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য হুয়াওয়ে তার অংশীদারদের সঙ্গে একটি বাস্তবসম্মত ইকোসিস্টেম নির্মাণ করতে ইচ্ছুক, যা উম্মুক্ত সহযোগিতা, বৈচিত্র্য ও সহনশীলতার ভিত্তিতে গড়ে উঠবে।
২০১৯ হলো ফাইভজি’র বছর। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় আইসিটি অবকাঠামো হিসেবে ফাইভজি এক দশমিক দুই ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার তৈরি করবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা এমনই ধারণা করছেন। এ অঞ্চলে ফাইভজি গ্রাহকের সংখ্যা ৮০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। ইন্টারনেট ট্রাফিক পাঁচগুণ বৃদ্ধি পাবে। ২০টির বেশি শহর আধুনিকায়ন হবে। ওয়্যারলেস, ডিজিটাল ও বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক উপাদানগুলো সামাজিক উৎপাদনশীলতাকে গড়ে চার থেকে আট শতাংশে উন্নীত করবে।
বক্তব্যের শেষে জেমস উ বলেন, ‘ফাইভজির ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় হিসেবে হুয়াওয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্ব অনেকটা পরবর্তী গন্তব্যের প্রথম বাস ধরার মতো। হুয়াওয়ে ২০ বছর ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কাজ করছে। আমাদের সব অংশীদারের দারুণ সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানাই। আমরা বিশ্বকে বলতে পারি যে, হুয়াওয়ে ভবিষ্যতের বৃদ্ধির জন্য বিশ্বস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।