বাংলাদেশ নতুন বলে পারমাণবিক বিদ্যুৎ খাতে ব্যয় বেশি: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: পারমাণবিক বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ নতুন হওয়ায় ব্যয় বেশি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। গতকাল সংসদে বিএনপির রুমিন ফারহানার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ওই দাবি করেন।
সংসদ সদস্য ব্যরিস্টার রুমিন ফারহানা প্রতিবেশী দেশ ভারতের তামিলনাড়–র কুনদানকুলা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয়ের তুলনা করে রূপপুরে বিপুল ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নতুন। অন্যদিকে ভারত ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করছে, যে কারণে তাদের তামিলনাড়–র কুনদানকুলা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামো ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। নতুন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ব্যয় কিছুটা বেশি।’
উল্লেখ্য, এক লাখ এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাশিয়ার সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে পাবনার রূপপুরে, যেখানে দুটি ইউনিটে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট করে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।
ইয়াফেস ওসমান আরও বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ভারতের তামিলনাড়–র কুনদানকুলা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তুলনায় অধিকতর উন্নত পদ্ধতিতে স্টাডি করা হয়েছে। রূপপুর পদ্মা নদীর তীরবর্তী হওয়ায় ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যা ভারতের তামিলনাড়–তে করতে হয়নি। বাংলাদেশ ও ভারতের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রযুক্তি এক হলেও দুটির ডিজাইনগত পার্থক্য আছে। রূপুপুরের ডিজাইন এইএস–২০০৬। কুনদানকুলার ডিজাইন এইএস–৯২। রূপপুরের প্রতিটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট, কুনদানকুলায় এক হাজার মেগাওয়াট।’
উল্লেখ্য, গত বছর ১৩ আগস্ট শেয়ার বিজে ‘রাশিয়ার ভিভিআর প্রযুক্তি: ব্যয়বহুল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (আইইবি) আয়োজিত ‘নিউক্লিয়ার এনার্জি ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ: অপারচুনিটিজ অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক সেমিনারের তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, রাশিয়ার ঋণে নির্মিত ও নির্মাণাধীন অন্যান্য দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় বাংলাদেশের চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কিলোওয়াটপ্রতি নির্মাণব্যয় পড়ছে পাঁচ হাজার ৭৪৬ ডলার। ভারতের কুনদানকুলা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩ ও ৪নং ইউনিটে কিলোটওয়াটপ্রতি ব্যয় পড়ছে দুই হাজার ৮৯০ কোটি ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশের অর্ধেক ব্যয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে ভারত।
এদিকে ভিভিআর-১২০০ প্রযুক্তির পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মিসরে ব্যয় হচ্ছে কিলোটওয়াটপ্রতি পাঁচ হাজার ২০৮ কোটি ডলার। একই প্রযুক্তির পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে তুরস্কে কিলোটওয়াটপ্রতি ব্যয় পড়ছে চার হাজার ১৬৭ কোটি ডলার। একই সমান ব্যয় হচ্ছে ভিয়েতনামের অস্ট্রোভেটস পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে। আর বেলারুশে কিলোটওয়াটপ্রতি ব্যয় পড়ছে চার হাজার ৬২৫ কোটি ডলার।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০