শেয়ার বিজ ডেস্ক: বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় স্থান। বাংলাদেশে এখন চমৎকার বিনিয়োগের পরিবেশ বিরাজ করছে। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। বিনিয়োগকারীরা এখন শতভাগ বিনিয়োগ করতে পারবেন, প্রয়োজনে বিনিয়োগকৃত শতভাগ অর্থ ও লাভ ফিরিয়ে নিতে পারবেন। পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে দ্বৈত কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, হংকংয়ের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করলে বেশি লাভবান হবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার হংকংয়ে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী ‘১৩তম প্রাইম সোর্স ফোরাম (পিএসএস)’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি এ আহ্বান জানান।
হংকংভিত্তিক গ্লোবাল ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির বার্ষিক সম্মেলন পিএসএফ ৮ ও ৯ মার্চ হংকংয়ের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফোরামে বাণিজ্যমন্ত্রী ‘দি গ্লোবাল ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ইকোনমিক অপরচুনিটিস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক কি-নোট উপস্থাপন করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শূন্যহাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। এই মার্চ মাসেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছিল।
বাংলাদেশ ১৯৭২-৭৩ সালে ২৫টি পণ্য ৬৮টি দেশে রফতানি করে আয় করত ৩৪৮ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলার। আজ বিশ্বের প্রায় ১৯৯টি দেশে ৭৪৪টি পণ্য রফতানি করে আয় করছে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার।
২০২১ সালে বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল মধ্য আয়ের দেশ। এ সময় মোট রফতানির পরিমাণ দাঁড়াবে ৬০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রফতানি করে আয় হবে ৫০ বিলিয়ন ডলার। ব্যাংকে বৈদেশিক মুূদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি, রেমিট্যান্স আসছে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। দেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বড়বড় প্রকল্প বাংলাদেশ সরকার নিজ অর্থে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ। দেশের রফতানির প্রায় ৮১ ভাগ আসে তৈরি পোশাক থেকে। জিডিপিতে এ সেক্টরের অবদান প্রায় ১৩ ভাগ। এ শিল্পে জনবল প্রায় ৫০ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগই নারী। দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল স্বীকৃত ৬৭টি গ্রিন ফ্যাক্টরি রয়েছে। নিবন্ধিত রয়েছে আরও ২২০টি। এবার ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল ১০টি তৈরি পোশাক ফ্যাক্টরিকে এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন (এলইইডি) সার্টিফিকেট দিয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশের সাতটি রয়েছে এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখলকারী প্রতিষ্ঠান তিনটিও বাংলাদেশের। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত এখন শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ শুধু ডিজিটাল মধ্যম আয়ের দেশই হবে না, বাংলাদেশ এলডিসিভুক্ত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। ডেভেলপিং কান্ট্রিতে পরিণত হতে যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, তা বাংলাদেশ অর্জন করেছে।
বিশ্বের ইকোনমিক ও সোশ্যাল কাউন্সিল উল্লিখিত তিনটি বিষয় বিবেচনা করে কোনো দেশকে নি¤œমধ্যআয়ের দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল (ডেভেলপিং) দেশে পরিণত হওয়ার ঘোষণা দেয়। চলতি মার্চ মাসে এ কাউন্সিলের মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি বা দরিদ্র দেশের রোল মডেল নয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় দেশ। দেশের ৮৯ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে, শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে বেশি সময় প্রয়োজন হবে না। ২০৪০ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে ২৮তম অর্থনীতি এবং ২০৫০ সালে ২২তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে।
ফোরামে যোগ দিতে বাণিজ্যমন্ত্রী ৭ মার্চ রাতে হংকংয়ের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।

Print Date & Time : 25 June 2025 Wednesday 8:48 pm
বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় স্থান
পত্রিকা ♦ প্রকাশ: