নিজস্ব প্রতিবেদক:গ্রাহক না পেলেও আজ বাংলাদেশ-ভারত রুপিতে বাণিজ্য আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতীয় হাইকমিশনের যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ঢাকার নিকুঞ্জ এলাকার লা মেরিডিয়ান হোটেলে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, ডেপুটি গভর্নর, বিভিন্ন ব্যাংকের এমডি, ভারতীয় হাইকমিশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা, ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য জড়িত ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক এবং ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও আইসিআইসিআই ব্যাংক উভয় দেশের মধ্যে রুপিতে বাণিজ্য করার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাংক।
সূত্র জানায়, সোনালী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) রুপিতে লেনদেনের জন্য নস্ট্রা হিসাব খুলতে অনুমোদন পেয়েছিল। তার মধ্যে ইবিএল ও এসবিআইকে গত সপ্তাহে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকে (আরবিআই) অনুমোদন দিয়েছে। তবে গতকাল পর্যন্ত কোনো গ্রাহক রুপিতে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে পারেনি। আর এলসি না হওয়ায় রুপি মজুত নেই ব্যাংকগুলোর। রুপি না থাকায় লেনদেনও হচ্ছে না। সুতরাং রুপির গ্রাহক না থাকায় এখন আর লেনদেন হবে না। কিন্তু গ্রাহক না পেলেও রুপির লেনদেন উদ্বোধন হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘রুপিতে বাণিজ্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতীয় হাইকমিশনের যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। এখন থেকে ভারতীয় মুদ্রা বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহার হবে। এটা ইতিবাচক বলে মনে করছি।’
রুপিতে লেনদেনের সঙ্গে জড়িত একটি ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ভারতের সঙ্গে রুপিতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য শুরু হচ্ছে। তবে এটা নির্ভর করবে ব্যবসায়ীরা তা চাইবে কি না তার ওপর। কোনো কারণে ব্যবসায়ীরা আগ্রহ না দেখালে এ প্রক্রিয়া উদ্বোধনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে।
ব্যাংকাররা জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বছরে ১৬ বিলিয়ন ডলারের মতো বাণিজ্য হয়। এর মধ্যে ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাংলাদেশ রপ্তানি করে এবং ১৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাংলাদেশ আমদানি করে। এর সঙ্গে রুপিতেও লেনদেনের একটি ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। রুপিতে লেনদেনের চাহিদা বাড়লে পর্যায়ক্রমে অন্য ব্যাংককেও অনুমতি দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আমদানিকারকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রুপিকে মর্যাদাপূর্ণ মুদ্রায় রূপান্তর করতে ভারত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরবিআই গত বছরের জুলাইয়ে এজন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এমনকি দেশটির বাণিজ্য সংগঠন ও ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দিতে থাকে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়, তারা যাতে ভারতীয় মুদ্রায় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু করে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রয়েছে বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি। ফলে রুপিতে লেনদেনে ঝুঁকিও রয়েছে। কিন্তু প্রক্রিয়াটি শুরু হলে পণ্য বাণিজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। ভ্রমণ, চিকিৎসা, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রেও ব্যবহার হবে।