বাংলাদেশ-ভারত ক্রেতা-বিক্রেতা বৈঠকে আলোচনা: যৌথ বিনিয়োগে উদার নীতি নেবে বাংলাদেশ

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা যৌথ বিনিয়োগ করতে চাইলে উদারনীতি গ্রহণ করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে শিল্প বিনিয়োগের উপযুক্ত জায়গা বাংলাদেশ। এজন্য ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা যৌথভাবে কাজ করতে পারে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ভারতীয় কৃষি খাত সংশ্লিষ্ট রফতানিকারকদের সঙ্গে বাংলাদেশি আমদানিকারকদের সভায় এসব কথা বলা হয়। সভায় পাঁচশ জন ভারতীয় ও আড়াইশ বাংলাদেশি প্রতিনিধি অংশ নেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোমেন আমু বলেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শিল্প খাতে পারস্পরিক সহায়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার হবে। বর্তমান সরকারের আমলে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, যাতায়াত ও যোগাযোগ জোরদার হয়েছে। এ যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (আইবিসিসিআই), ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) ও ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন যৌথভাবে এ সভা আয়োজন করে। আইবিসিসিআইর সভাপতি তাসকিন আহমেদের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, এফবিসিসিআই’র সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন, সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, ভারতীয় চেম্বার অব কমার্সের ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব সিং, আইবিসিসিআই’র সিইও জাহাঙ্গীর বিন আলম প্রমুখ।

শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিশাল সুযোগ রয়েছে। এ অঞ্চলে বাংলাদেশি ইট, সিমেন্ট, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং খাদ্য পণ্য, কৃষিভিত্তিক পণ্য, মাছ এবং মাছজাত পণ্য, মেলামাইন, সিরামিক, প্রসাধনী ও কসমেটিকস এবং সিআই শিট, হালকা প্রকৌশল পণ্য ইত্যাদির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে, ভৌগোলিক নৈকট্য এবং স্বল্প পরিবহন ব্যয়ের ফলে এ সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। কৃষিখাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ব্যাপক।

দেশের কৃষিভিত্তিক শিল্পের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ২৪৬টি উন্নতমানের মাঝারি আকারের খাদ্য উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সরকারি প্রণোদনা নিয়ে রফতানি প্রবৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এ শিল্পখাত দ্রুতি বিকশিত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রফতানি করছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, সম্প্রতি বেসরকারি পর্যায়ে ১৩টি চুক্তি সই হয়েছে দুদেশের মধ্যে। এর মাধ্যমে ১০ বিলিয়ন ভারতীয় বিনিয়োগ হবে বাংলাদেশে। তা ছাড়া সীমান্ত পেরিয়ে বিনিয়োগ ইতোমধ্যেই হচ্ছে। লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট ভারতের মেঘালয় থেকে লাইমস্টেন সংগ্রহ করছে। আর বাংলাদেশে সিমেন্ট উৎপাদন করছে। কৃষি ও সংশ্লিষ্ট খাতেও বিপুল যৌথ বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোও ভারতীয় বাজারে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে প্রাণ কোম্পানি ত্রিপুরায় ভালো অবস্থান করেছে।

হাইকমিশনার বলেন, ভারতের বাজারে পণ্য রফতানি করতে হলে তার মান সংরক্ষণ প্রয়োজন। এজন্য এখন বিএসটিআইর পরীক্ষাকে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ভারত। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এখন ২১টি খাদ্য পণ্যের ওপর বিএসটিআইয়ের সনদপত্র গ্রহণ করছে। এবারের ক্রেতা-বিক্রেতা বৈঠকের মাধ্যমে দুদেশের কৃষিখাতে বাণিজ্যে আরও অগ্রগতি হবে বলে তিনি আশা করেন। উল্লেখ্য, দুই দিনব্যাপী এ ক্রেতা-বিক্রেতা বৈঠকে কৃষিপণ্য ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, মাংস, শাকসবজি ইত্যাদি খাতের বিভিন্ন পণ্য ও সেবা প্রযুক্তির প্রদর্শনী করেন ভারতীয় উদ্যোক্তারা।

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০