জাকারিয়া পলাশ: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার যৌথ কাস্টমস গ্রুপের বৈঠক হবে চলতি মাসের ২৩ ও ২৪ তারিখ। ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য এ বৈঠকের আয়োজন করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার জন্য বাংলাদেশের তরফ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে এখানে আলোচনার জন্য ১৯টি অগ্রাধিকারভিত্তিক এজেন্ডা ঠিক করা হয়েছে।
বৈঠকের অংশ হিসেবে প্রস্তুতি নিতে আজ রোববার আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক আহ্বান করেছে এনবিআর। এতে সংশ্লিষ্ট ১৭টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, যৌথ কাস্টমস গ্রুপ বৈঠকে বাংলাদেশ পাট ও কেমিক্যাল পণ্যের ওপর ভারতের আরোপ করা অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটির বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। এ ইস্যুটিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এজেন্ডাভুক্ত করা হচ্ছে। এদিকে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা থেকে ভারতের উত্থাপিত বিভিন্ন এজেন্ডার বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থানও ঠিক করা হবে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে এনবিআর। ওই চিঠির তথ্যমতে, এনবিআরের শুল্ক, নিরীক্ষা, আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক সদস্য খন্দকার মুহাম্মদ আমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থা থেকে সম্ভাব্য এজেন্ডার বিষয়ে মতামত দিতে বলা হয়েছে।
সূত্রমতে, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) মানসংক্রান্ত সনদপত্র ভারতে গ্রহণ করা হয় না। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আসন্ন যৌথ কাস্টমস গ্রুপের বৈঠকে বিএসটিআইয়ের সনদের স্বীকৃতি চাওয়া হবে। এ সনদ স্বীকৃতি পেলে বাংলাদেশের পণ্য কিংবা বাংলাদেশে স্থাপিত ভারতীয় কোম্পানির কারখানায় উৎপাদিত পণ্য ভারতের বাজারে রফতানিতে বাধা দূর হবে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করে আসছিলেন। এছাড়া সভায় দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানিসংক্রান্ত তথ্য নিয়মিত আদান-প্রদানের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
স্থলবন্দরগুলোয় নির্বাধ তথ্য-যোগাযোগ-প্রযুক্তির ব্যবহার উš§ুক্তকরণ, সিলেট সীমান্তবর্তী দলুরা-বালাত স্থলবন্দর চালুকরণ, ভারতের হলদিবাড়ি ও মাজদিয়ার স্থলবন্দর চালুকরণ, মেঘালয় রাজ্যের ইছামতি বেলতলি গ্রাম থেকে বাংলাদেশের লুবিয়া গ্রাম পর্যন্ত সীমান্তের ওপর দিয়ে মোটর চলাচলের উপযোগী রাস্তা নির্মাণ, কার (গাড়ি) পাস ব্যবস্থা অনুমোদন, দর্শনা-গেড থেকে রেলওয়ে ওয়াগন যাতায়াতে ভাড়া নির্ধারণ, বিভিন্ন পণ্যের সার্টিফিকেট অব অরিজিনের (সিওও) অনলাইন আদান-প্রদান, সীমান্তের উভয় পাশে কাস্টমস কর্মকর্তাদের অবাধ যাতায়াতের ব্যবস্থা এবং ভারতের অভ্যন্তরে অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনার জন্য এজেন্ডভুক্ত করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া পণ্য আমদানিতে বন্দরে আরোপিত ভারতীয় বাধা, অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি, বিবিআইএনের কাস্টমস সাব-গ্রুপ প্রতিষ্ঠা এবং অবকাঠামো উন্নয়নে গঠিত দ্বিদেশীয় সাব-গ্রুপের সভা নিয়মিত করার বিষয়েও আলোচনা করতে আগ্রহী বাংলাদেশ।