বাংলাদেশ হতে পারে আসিয়ান ও এশিয়ার বাণিজ্যিক কেন্দ্র: এফবিসিসিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসিয়ান, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য ব্যবসার সেতুবন্ধন স্থাপন ও দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হতে পারে বলে মনে করে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ভিয়েতনামের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ। ভিয়েতনামের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট মান্যবর ভং দিন হুয়ে।

যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, বাংলাদেশ শিগগির এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের মাইলফলক স্পর্শ করবে। ইতোমধ্যে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশকে আসিয়ান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে একাধিক এফটিএ এবং পিটিএ চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনামের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদার এখন সময়ের দাবি। এর ফলে বাংলাদেশ নতুন নতুন বাজারে প্রবেশ আরও সহজতর হবে। বিশেষ করে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য জোরদারে ভিয়েতনাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং ভৌগোলিক অবস্থানের আসিয়ান, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য ব্যবসার সেতুবন্ধন স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হতে পারে বাংলাদেশ।’ আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে লাভজনক বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ‘রিজিওনাল কম্প্র্রেহেনসিভ ইকনোমিক পার্টনারশিপ-আরসিইপি’তে যুক্ত হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট ভং দিন হুয়ে বলেন, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের মধ্যে অসাধারণ বন্ধুত্ব বিরাজ করছে। ভারতের পরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ভিয়েতনামের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাণিজ্যিক অংশীদার। সম্প্রতি দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে। আমরা এ সম্পর্ককে আরও বহুদূর এগিয়ে নিতে চাই। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য জোরদারে ভিয়েতনাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ভিসিসিআই) এবং দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এদেশের সরকার ও এফবিসিসিআই-এর সঙ্গে সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলেও জানান তিনি। এ সময় এফবিসিসিআই নেতাদের ভিয়েতনামে ভ্রমণের আহ্বান জানান তিনি।

সৌজন্য সাক্ষাতের পরে বিকালে ‘ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার উন্নয়নে নীতি ও আইনবিষয়ক ফোরাম’ শীর্ষক আলোচনা এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি শমী কায়সার। ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্ক ও ট্যুরিজমে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে শমী কায়সার বলেন, ‘আমাদের এগ্রো এবং ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি এখন দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের তৈরি পোশাক খাত চীনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক। বিশ্বের সেরা ১০টি সবুজ পোশাক কারখানার মধ্যে শীর্ষ ৮টি বাংলাদেশে অবস্থিত। নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা বাড়তে আমাদের দেশে। ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীরা এ বিষয়গুলো ভেবে দেখতে পারে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ন্যুয়েন মান কুঅংকে, এফবিসিসিআই-এর মহাসচিব মো. আলমগীর, ইন্টারন্যাশনাল উইংয়ের প্রধান রাষ্ট্রদূত মাসুদ মান্নান এনডিসি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০