নিজস্ব প্রতিবেদক: যুদ্ধের গোলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের ২৮ নাবিক ও প্রকৌশলী ইউক্রেন থেকে মালদোভা সীমান্ত পার হয়ে রোমানিয়ায় প্রবেশ করেছেন। রোমানিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী গতকাল এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, নাবিকরা রোমানিয়ায় প্রবেশ করেছেন।
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর থেকে মালদোভা সীমান্ত প্রায় ২০০ কিলোমিটার। ওই পথ পাড়ি দিয়ে রোমানিয়া পৌঁছাতে তাদের সময় লাগল তিন দিন। আপাতত রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টের একটি হোটেলে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘তারা বুখারেস্টে পৌঁছানোর পর এখানে থাকবেন। পরে ফ্লাইটে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। তার আগে নাবিকদের সঙ্গে আমরা কথা বলব। তারা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আসছেন, বিশ্রাম প্রয়োজন। তাদের সঙ্গে আলাপ করেই দেশে ফেরানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী জানান, রকেট হামলায় নিহত বাংলার সমৃদ্ধির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমানের মরদেহ ইউক্রেনেই সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সেখান থেকে মরদেহ দেশে পাঠানোর বিষয়টি পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস দেখাশোনা করছে।
পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন শনিবার রাতে জানিয়েছিলেন, নাবিকরা ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে মালদোভায় পৌঁছানোর পর রোমানিয়ার পথে রওনা হয়ে গেছেন। বিএসসির মালিকানাধীন জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পৌঁছায়। সেখান থেকে পণ্য নিয়ে জাহাজটির ইতালি যাওয়ার কথা ছিল।
এর আগেই রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হলে যুদ্ধ বেঁধে যায়। পণ্য নেয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে তখন ‘চ্যানেল ক্লিয়ার’ হওয়ার অপেক্ষায় ছিল জাহাজটি। এর মধ্যেই গত ২ ফেব্রুয়ারি জাহাজে রকেট হামলায় মারা যান হাদিসুর রহমান। জাহাজের ব্রিজও দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরদিন বিকালে জাহাজ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় এবং বাকি ২৮ জনকে সরিয়ে নিতে কাজ শুরু হয়।
শুক্রবার রাত পর্যন্ত তারা বন্দরের কাছাকাছি একটি শেল্টার হাউসের বাংকারে ছিলেন। শুরুতে তাদের পোল্যান্ড নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের মলদোভা নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী শনিবার দুপুরে শেল্টার হাউস ছেড়ে তারা সীমান্তের পথে রওনা হন।
বাণিজ্যিক জাহাজের নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ) শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলার সমৃদ্ধির নাবিকরা পাশের দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেও পথে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ও যানজটের দীর্ঘ সারির কারণে সময় লাগছে।