বাংলালিংকের গ্রাহক কমেছে ২১ লাখ: চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিক

শরিফুল ইসলাম পলাশ: বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনর্নিবন্ধন ও রবি-এয়ারটেল একীভূতকরণে পিছিয়ে পড়েছে বাংলালিংক। চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বহুজাতিক কোম্পানিটির গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ২১ লাখ কমেছে। অথচ আগের ৯ মাসে (অক্টোবর ’১৫-জুন ’১৬) কোম্পানিটির গ্রাহক কমেছিল ১২ লাখ। দ্রুত গ্রাহক হারানোর প্রভাব পড়েছে বাংলালিংকের আয়ে। এতে চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকেই কোম্পানিটির আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে দুই শতাংশ।

বাংলালিংকের ৫১ দশমিক ৯২ শতাংশ শেয়ারধারী বহুজাতিক কোম্পানি ‘ভিম্পলকম’ প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। তবে ‘বিষয়টি নেতিবাচক’ উল্লেখ করে এ বিষয়ে মন্তব্য চাননি বাংলালিংকের দায়িত্বশীলরা।

ভিম্পলকমের তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাস শেষে বাংলালিংকের গ্রাহকসংখ্যা দুই কোটি ৯০ লাখে দাঁড়িয়েছে। এর আগে দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত সময়ে তাদের গ্রাহক ছিল তিন কোটি ১১ লাখ। সে হিসেবে তিন মাসের ব্যবধানে বাংলালিংকের গ্রাহক ২১ লাখ কমেছে। আর এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ৩৩ লাখ। এদিকে ২০১৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বাংলালিংকের গ্রাহক আগের অর্থবছরের (২০১৪ সালের) একই প্রান্তিকের তুলনায় সাত শতাংশ বা ২১ লাখ বেড়েছিল। আর চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির গ্রাহক ২০১৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় ১০ দশমিক চার শতাংশ বা ৩৩ লাখ কমেছে।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনর্নিবন্ধন ও রবি-এয়ারটেল একীভূতকরণকেই বাংলালিংকের গ্রাহক কমার জন্য দায়ী করা হচ্ছে। এ কারণে কোম্পানিটির আয়ের প্রবৃদ্ধি এক প্রান্তিকে দুই শতাংশ ও এক বছরের ব্যবধানে ছয় শতাংশ কমেছে। তবে গ্রাহক কমলেও মোবাইল ডেটা থেকে আয় বাড়ার কারণে তিন মাসের ব্যবধানে মোট আয়ের অংকে খুব বেশি হেরফের হয়নি। ২০১৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে এক হাজার ১৯০ কোটি টাকা আয় করেছিল বাংলালিংক। আর চলতি অর্থবছরের তৃতীয়

প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় এক হাজার ২৩০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা আগের অর্থবছরের একই প্রান্তিকের (২০১৫ সালের) তুলনায় তিন শতাংশ বা ৪০ কোটি টাকা বেশি।

এদিকে এক বছরে কোম্পানিটির ইন্টারনেট ডেটা থেকে আয় ৪০ কোটি টাকা বেড়েছে। ২০১৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বাংলালিংক এ খাত থেকে আয় করেছিল ৯০ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ১৩০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৯ মাসে ডেটা আয় বেড়েছে ৩০ কোটি টাকা, আর সর্বশেষ তিন মাসে ওই আয় বেড়েছে ১০ কোটি টাকা।

তবে ডেটা থেকে আয় বৃদ্ধি কমেছে বাংলালিংকের। সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকে এ খাতে আয়ের প্রবৃদ্ধি আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১৫ শতাংশ কমেছে। তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ৪৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে এর আগের অর্থবছরের একই সময় এ প্রবৃদ্ধি ছিল ৬০ শতাংশ।

গ্রাহক ও আয় প্রবৃদ্ধি কমার কারণ জানতে চাওয়া হলে বাংলালিংকের করপোরেট কমিউনিকেশন ম্যানেজার অংকিত সুরেকা সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এক্ষেত্রে তিনি গণযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান কনসিটো পিআরের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। পরে কনসিটো পিআরের মাধ্যমে প্রশ্ন পাঠানো হলে জানানো হয়, ‘ভিম্পলকমকে পাঠানো হলেও বাংলালিংকের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হয়নি। আর এ বিষয়টি নেতিবাচক। তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে ইচ্ছুক নয় বাংলালিংক।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০