বর্তমানে সব ধরনের কর্মক্ষেত্রে বাড়ছে প্রতিযোগিতা। এমন পরিস্থিতিতে সফল পেশাজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চাইলে শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপারে বিশেষভাবে সচেতন হতে হয় শিক্ষাজীবন থেকেই। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ কর্মক্ষেত্রে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অনেক ক্ষেত্রে পেশাগত সাফল্যের জন্য যথেষ্ট নয়। শিক্ষাজীবনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রের বাস্তব অভিজ্ঞতাকে তাই বিশ্বজুড়ে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়।
বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্রের বাস্তব অভিজ্ঞতা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এমনই একটি উদ্যোগ বাংলালিংক ইনোভেটরস। ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংকের বিশেষ এ উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি সরাসরি এ প্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগও পেতে পারেন। ২০১৭ সালে চালু হওয়া প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যবসায়িক পরিকল্পনার এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো শিক্ষার্থী।
প্রাথমিক বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিবন্ধনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বেছে নেওয়া হয় চূড়ান্ত প্রতিযোগীদের। পরবর্তী সময়ে গ্রুমিং, বুট ক্যাম্প সেশন, ওয়র্কশপ ও অন্যান্য কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে বাংলালিংক ইনোভেটরস। প্রতিযোগিতার সব পর্যায়ে নিজেদের দক্ষতা দেখাতে হয় প্রতিযোগীদের। সুনিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের নিয়ে গঠিত সেরা দলটি নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে বাংলালিংকের স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান ভিওনের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন ও বাংলালিংকের ‘স্ট্র্যাটেজিক অ্যাসিস্টেন্ট প্রোগ্রাম’র অ্যাসেসমেন্ট সেন্টারে যোগদানের সুযোগ পায়। প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা দলের সদস্যরাও এ প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারেন। এ ‘স্ট্র্যাটেজিক অ্যাসিস্টেন্ট প্রোগ্রাম’র মাধ্যমেই পরবর্তীকালে বাংলালিংকে ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ পান সেরা প্রতিযোগীরা।
উদ্যোগটি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বাংলালিংকের চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিসার মনজুলা মোরশেদ বলেন, দেশের মেধাবী তরুণদের প্রতিভা বিকাশ ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বাংলালিংকের পক্ষ থেকে এ বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের পরিবেশে কর্মক্ষেত্রের বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ পাচ্ছেন। এ অভিজ্ঞতা পেশাগত জীবনে তাদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বাংলালিংক ইনোভেটরস ও স্ট্র্যাটেজিক অ্যাসিস্টেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলালিংকে ক্যারিয়ার শুরু করা তরুণদের মধ্যে একজন রাফিদ উর রব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে বিবিএ তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় বাংলালিংক ইনোভেটরসে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে প্রতিযোগিতার সব ধাপ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করে তিনি বাংলালিংকে নিয়োগ পান। রাফিদ বলেন, ছাত্রজীবনে আমাদের অনেকেরই কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকে না। কিন্তু নিজেকে সঠিকভাবে প্রস্তুত করার জন্য এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকা অত্যন্ত জরুরি। বাংলালিংক ইনোভেটরসের মতো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা এ অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পেতে পারেন। প্রতিযোগিতাটির বিভিন্ন অভিজ্ঞতা পেশাজীবী হিসেবে গড়ে তুলতে আমাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছে।
এ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় আসরে অংশ নিয়ে এবার আমস্টারডামে ভিওনের কার্যালয় পরিদর্শনের সুযোগ পেয়েছেন বুয়েট শিক্ষার্থী আসিফ ইমরুল। প্রতিযোগিতার অভিজ্ঞতা ও বিশেষ এ সুযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, শিক্ষাজীবন শেষ করতে না করতেই এত বড় একটি সুযোগ পাব ভাবতেই পারিনি। ভিওনের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে আমার আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতা বাড়িয়ে দেবে। এ অভিজ্ঞতাকে আমি ভবিষ্যতে পেশাজীবনে কাজে লাগাতে চাই।
তৃতীয় আসর বা পর্ব শুরু হবে এ মাসে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর আগ্রহী ছাত্রছাত্রীরা বাংলালিংক ইনোভেটরসের ওয়েবসাইটে (ennovators.banglalink.net) গিয়ে নিবন্ধন করে প্রতিযোগিতাটিতে অংশ নিতে পারবেন।