বাংলালিংক ও জিএসএমএ (টেলিকম শিল্পের আন্তর্জাতিক সংস্থা) পরিচালিত একটি বিশেষ ডিজিটাল প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারে অপেক্ষাকৃত স্বল্প দক্ষ জনগোষ্ঠীপূর্ণ কিছু অঞ্চলে এ কর্মসূচি পরিচালিত হয়। কর্মসূচিটির সার্বিক ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের ইন্টারনেট সার্ভিস ব্যবহার বৃদ্ধিতে ডিজিটাল প্রশিক্ষণ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের প্রাথমিক পর্যায়ের ডিজিটাল প্রশিক্ষণদান এবং প্রশিক্ষণের পর তাদের মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের ধরন পর্যবেক্ষণ করার লক্ষ্যে তিন মাসব্যাপী এ পাইলট কর্মসূচি পরিচালনা করা হয়।
কর্মসূচির আওতায় নির্ধারিত কিছু অঞ্চলে প্রযুক্তি ব্যবহারে অদক্ষ বা স্বল্প দক্ষ গ্রাহকদের ইন্টারনেটের প্রাথমিক প্রশিক্ষণের জন্য বাংলালিংক সেলস অ্যান্ড সার্ভিস পয়েন্ট (বিএসএসপি) সেলস এজেন্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়। এ সেলস এজেন্টরা জিএসএমএ কানেক্টেড সোসাইটি প্রোগ্রামের তৈরি মোবাইল ইন্টারনেট স্কিলস ট্রেনিং টুলকিট (এমআইএসটিটি) নামের একটি বিশেষ গাইড ব্যবহার করেন। গাইডটি প্রশিক্ষকদের মোবাইল ফোনে সাধারণ অ্যাপ (হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল ও ফেসবুক) ব্যবহার, ব্যবহার করা ডেটার পরিমাণ দেখা ও নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর প্রশিক্ষণ দিতে সাহায্য করে।
এক লাখ ১৭ হাজার গ্রাহক তিন হাজার ২০০ সেলস এজেন্টের কাছ থেকে এ পাইলট কর্মসূচিতে ডিজিটাল প্রশিক্ষণ নেন। কর্মসূচির ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রশিক্ষিত গ্রাহকদের ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ ২২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে বাংলালিংকের নেটওয়ার্কে ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধি পায় ৫৯ শতাংশ। এছাড়া প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ১৯ শতাংশ ডেটা ব্যবহার না করা গ্রাহক ও ১৫ শতাংশ অনিয়মিতভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করা গ্রাহক নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীতে পরিণত হয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ কর্মসূচিটির পর ২৮ দশমিক পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ কর্মসূচি ও অন্য ফল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন https://bit.ly/2S4OqUV ওয়েবসাইটটি।
বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস বলেন, বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে নিঃসন্দেহে অসাধারণ প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধন করেছে। তবে সত্যিকার অর্থে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে ডিজিটাল সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া জরুরি। এ ধরনের যৌথ উদ্যোগ কার্যকর প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়িয়ে এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। কর্মসূচিটির ফল স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে, ডিজিটাল প্রশিক্ষণের সুবিধা নির্ধারিত এ শ্রেণির জনগোষ্ঠীর কাছে ডিজিটাল সেবাকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে।
জিএসএমএ’র হেড অব কানেকটেড উইমেন অ্যান্ড কানেকটেড সোসাইটি ক্লায়ার সিবথর্প বলেন, বাংলাদেশের মতো যেসব দেশে প্রযুক্তিগত দক্ষতার স্বল্পতা মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি প্রধান প্রতিবন্ধক, সেসব দেশে ডিজিটাল প্রশিক্ষণের উদ্যোগগুলোকে সহায়তার লক্ষ্যে এমআইএসটিটি প্রস্তুত করা হয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেটের সংযোগ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসতে পারে। বাংলাদেশে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বাংলালিংকের সঙ্গে এ উদ্যোগে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত।
বাংলালিংক
বাংলালিংক দেশের অন্যতম মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে গ্রাহকদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়ার অপার সম্ভাবনা উম্মোচনের লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে জীবনযাত্রার পরিবর্তনে বিশ্বাসী বাংলালিংক ডিজিটাল যুগের চাহিদা পূরণে সক্ষম একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হওয়ার চেষ্টায় নিয়োজিত। এটি নেদারল্যান্ডসভিত্তিক ইন্টারনেট সংযোগদানকারী প্রতিষ্ঠান ভিওন লিমিটেডের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান, যা নাসডাক ও ইউরোনেক্সটের তালিকাভুক্ত।