Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 10:27 pm

বাংলা ব্লকেডে শোডাউন করছে নারীরা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: কোটা বিরোধী আন্দোলনে উত্তপ্ত রাজপথ। সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের চার দফা দাবিতে আজও শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

চলমান এই আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। আন্দোলনের শুরুতে তুলনামূলক কম উপস্থিতি থাকলেও প্রতিনিয়ত বাড়ছে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ। বিশেষ করে ঢাবির বিভিন্ন হলের নারী শিক্ষার্থীরা মিছিল সহকারে কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের চেয়ে আজকের কর্মসূচিকে নারী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ছিল কয়েক ‍গুণ বেশি ছিল। রোকেয়া হল, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, শামসুন্নাহার হল, সুফিয়া কামালসহ ঢাবির মোট পাঁচ হলের মেয়ে শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ডে কোটা সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন উক্তি লিখে হলের ব্যানারে আন্দোলনে উপস্থিত হয়।

শাহবাগ অবরোধে অংশ নেন হাজারও নারী শিক্ষার্থী। ঢাবির বিভিন্ন হল থেকে ব্যানার ফেস্টুন সহকারে আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হন তারা। তাদের সরব উপস্থিতি আন্দোলনকে নতুন রূপ দিয়েছে বলে মনে করছে আন্দোলন সংশ্লিষ্টরা।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, আমি একজন নারী কিন্তু আমার নারী কোটার দরকার নেই। কোটা সিস্টেমটাই বৈষম্যের সৃষ্টি করে। আর তা যদি থাকতেই হয় সেটা ৫% কিংবা ১০%। আমরা আমাদের দাবি আদায়ের জন্য মাঠে নেমেছি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ থেকে সরব না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুননাহার হলের শিক্ষার্থী স্মৃতি আফরোজ সুমি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, চাকরিতে নিয়োগ ও অন্য সব প্রতিযোগিতার জায়গায় আমরা মেধার শতভাগ মূল্যায়ন চাই। নৈতিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা আন্দোলনে এসেছি। সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমরা মেধার মূল্যায়ন চাই।’

কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের বোনেরা আন্দোলনের প্রথম সারিতেই থাকেন। তাদের উপস্থিতি আমাদের সাহস বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হল থেকে বহু নারী শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই সমন্বিত আন্দোলন চলবে।’

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের আন্দোলন করে। টানা আন্দোলনের জেরে পরিপত্রের মাধ্যমে সরকার সংস্কার না করে পুরো কোটা ব্যবস্থাই বাতিল করে দেয়।

সম্প্রতি সেই সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে রিট হলে উচ্চ আদালত সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটার অংশটি বাতিল করে দেয়। এরপর আবারো শিক্ষার্থীরা তা পুনর্বহালের দাবিতে মাঠে নামেন। কয়েকদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে- ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করতে হবে।

সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।

হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি নিয়ে কয়েক ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় টানা আন্দোলন চলছে।