নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা ঝুঁকির কারণে গত মার্চ থেকে বন্ধ ছিল অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবা। তবে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবির মুখে গত ২১ জুন থেকে ২৫৫টি গাড়ি পরিচালনার অনুমতি দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। তবে বাইক এর আওতার বাইরে ছিল। এবার বাইকেও যাত্রী পরিবহনের অনুমতি মিলছে।
গতকাল বিআরটিএতে এ-সংক্রান্ত চিঠি জমা দিয়েছে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলো। চলতি মাস শেষে সেপ্টেম্বরে এ সেবা চালুর আভাস মিলেছে।
জানতে চাইলে পাঠাওয়ের মার্কেটিং লিড সৈয়দা নাবিলা মাহবুব শেয়ার বিজকে বলেন, ‘করোনার প্রতিরোধে বিধিবিধান মেনে যেমন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, হ্যান্ডগ্লাভস ব্যবহার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে পাঠাও রাইড শেয়ারিং চালু করা যায় কি না বিবেচনা করতে এ বিষয়ে এর আগে দুই দফা চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো কিছু নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
এ প্রসঙ্গে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, পাঠাও, সহজসহ প্রতিষ্ঠানগুলো বাইক রাইড শেয়ারিং চালুর দাবি জানিয়েছে। যেহেতু এখনও স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে শর্ত রয়েছে। তাই আপাতত অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, উবার, পাঠাও, সহজ এ রকম অ্যাপভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহনের জন্য বিআরটিএতে কয়েক দফা চিঠি দিয়েছে। সর্বশেষ গতকাল বিআরটিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছে তারা।
এদিকে করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনা করছে সরকার। এক্ষেত্রে আগের নিয়মে ফিরতে চান বাস মালিকরা। বিআরটিএ থেকে এ-সংক্রান্ত চিঠি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। কারণ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশেই গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা আছে। এরই মধ্যে ৩১ আগস্টের পর স্বাস্থ্যবিধির শর্ত শিথিলের আভাস পাওয়া গেছে। এ রকম ঘোষণা এলে সেপ্টেম্বরেই বাইকে যাত্রী পরিবহনের অনুমতি দেবে বিআরটিএ।
স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে বাইকের মাধ্যমে এ সেবা নিষেধ থাকলেও তা বাস্তবে চলছে। অ্যাপ নয়, চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহন করছে বাইকাররা। এতে একদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অ্যাপভিত্তিক কোম্পানিগুলো। অন্যদিকে সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া যাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি তো রয়েছেই। তাই সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো পুনরায় বাইক রাইড শেয়ারিং চালুর পক্ষে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে দেশে অ্যাপভিত্তিক পরিবহনসেবা রাইড শেয়ারিং শুরু হয়। ব্যক্তিগত গাড়ি ও বাইকের বাণিজ্যিক ব্যবহার দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এ দেশে। এরপর রাইড শেয়ারিং নিয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। মোট ৯টি প্রতিষ্ঠান বৈধতা পায় এ আইনের আওতায়। আবার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও নীতিমালার সব শর্ত পূরণ করতে পারেনি। ফলে গাড়ির অবস্থান শনাক্ত করার সুযোগ পাচ্ছে না পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।