শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। এতে আবারও প্রার্থী হয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচনের আগে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে শুরু হবে টেলিভিশন বিতর্ক। এই বিতর্কে গুরুত্ব পাবে নানা অর্থনৈতিক ইস্যু। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, জ্বালানি তেলের উৎপাদন এবং ঋণ ও বৈদেশিক বাণিজ্য এতে গুরুত্ব পাবে। খবর: ইয়াহু নিউজ ও এনবিসি নিউজ।
আটলান্টায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প ও ডেমোক্রেট প্রার্থী বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক শুরু হবে।
ট্রাম্প বিতর্কে মূল্যস্ফীতির বিষয়টিকে সামনে আনতে পারেন। মূলত তিনি তার সব নির্বাচনী প্রচারণায় এ বিষয়ে কথা বলছেন। তার দাবি, বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। ট্রাম্পের এই অভিযোগ সত্য। তবে ২০২২ সালের পর যে মূল্যস্ফীতি কমছে, তা তিনি এড়িয়ে যাচ্ছেন।
বাইডেনের শপথ নেয়ার পর মোট মূল্য বাড়ে ২০ শতাংশ। যদিও ট্রাম্পের চার বছরে মূল্য বেড়েছিল ৭ দশমিক ৮ শতাংশের মতো। তবে বাইডেন কর্মসংস্থানের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসে জবাব দেবেন। তিনি হোয়াইট হাউসে আসার পর ১৫ মিলিয়ন কর্মসংস্থান হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালে করোনা মহামারিতে ব্যাপক চাপে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার। এক মাসে কমে যায় দুই কোটির বেশি কর্মসংস্থান। তবে বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর ধীরে ধীরে শ্রমবাজার পুনরুদ্ধার হয়। বর্তমানে দেশটির শ্রমবাজার করোনা মহামারির আগের পর্যায়ে চলে গেছে।
তাছাড়া কার শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি ঋণের কবলে পড়েছে, সেটাও আলোচনার বিষয়। জানা গেছে, ট্রাম্পের চার বছরে মার্কিন সরকারের ঋণ বেড়েছে প্রায় আট ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে বাইডেনের সময় বেড়েছে ৬ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। গত সাড়ে সাত বছরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ বেড়েছে ৭০ শতাংশ।
বাণিজ্য আরেকটি আলোচিত ইস্যু নিয়ে বাইডেন ও ট্রাম্প দুজনেই কথা বলছেন। প্রশ্ন হলোÑকার আমলে মার্কিন সরকার শুল্ক থেকে বেশি আয় করেছে। ট্রাম্প চীনের ৩০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন। অন্য অংশীদারদের ওপর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের শুল্ক আরোপ করেন।
ট্রাম্পের এসব পদক্ষেপের সবই অব্যাহত রাখেন বাইডেন। তাছাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাইডেন নতুন করে শুল্ক বাড়িয়েছেন। সম্প্রতি চীনের ১৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেন।
পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে-ই জয়ী হোক না কেন এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে ট্রাম্প অঙ্গীকার করছেন, চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরও বাড়ানো হবে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের বিতর্কে উপস্থিত থাকতে পারেন বলে উল্লেখ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি জানেন যে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কে হবেন। ফিলাডেলফিয়ায় গত শনিবার নির্বাচনী সমাবেশে এনবিসি নিউজ সাবেক প্রেসিডেন্টের কাছে প্রশ্ন রাখেÑতিনি তার ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না। ট্রাম্প উত্তরে বলেছিলেন, হ্যাঁ, আমার মাথায় আছে।
সম্ভাব্য ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারের বিতর্কে থাকবেন বলে জানান তিনি। ট্রাম্প বলেন, তারা সেখানে থাকবেন। আমি মনে করি এক্ষেত্রে আমাদের অনেক লোক রয়েছেন। ট্রাম্প সরাসরি কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, এখন পর্যন্ত আমার পছন্দের বিষয়ে কেউ জানে না।
এনবিসি নিউজ আগের এক প্রতিবেদনে ট্রাম্পের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে সম্ভাব্য শীর্ষ প্রতিযোগী নর্থ ডাকোটার গভর্নর ডগ বার্গাম, ওহাইওর সেনেটর জেডি ভ্যান্স এবং ফ্লোরিডার সেনেটর মার্কো রুবিওর নাম উল্লেখ করে। বাছাই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, বার্গাম ও ভ্যান্সকে শীর্ষ দুই চূড়ান্ত প্রতিযোগী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সাংবিধানিক জটিলতা থাকার পরেও রুবিওকে এখন পর্যন্ত বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে ট্রাম্প বা রুবিওর মধ্যে যেকোনো একজনকে ফ্লোরিডার বাইরে আবাসিক বাড়ি করতে হবে।
এ বিষয়ে ট্রাম্পের সিনিয়র অ্যাডভাইজার ব্রায়ান হিউজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, একজন ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শীর্ষ মাপকাঠি হলো এমন একজন শক্তিশালী নেতা, যিনি পরবর্তী চার বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আরও চার বছরের জন্য একজন বিশিষ্ট প্রেসিডেন্ট হবেন।