নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রায় সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব না দিয়েই চলে গেছেন বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু। গতকাল সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় অভিযোগের মুখে থাকা বাচ্চুকে চতুর্থ দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের তদন্তকারী দলের সদস্যরা।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, ‘কমিশনের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টায় এ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। শেষ হয় বিকাল পৌনে ৫টায়।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকালে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা বাচ্চুর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি ‘নো কমেন্টস’ বলে গণমাধ্যমকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
দুপুরে বিভিন্ন টেলিভিশনে ‘দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে বাচ্চু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন’ বলে সংবাদ প্রচার করা হয়। দুদক থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাচ্চু বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে নয়, আমি আগে থেকেই অসুস্থ’। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের নামে দুদক ‘হয়রানি’ করেছে কি নাÑএমন প্রশ্নে বাচ্চু বলেন, ‘এটা দুদককে জিজ্ঞাসা করেন’।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির সাবেক এ এমপি নিজেকে ‘দোষী মনে করেন না’ বলে দাবি করেছিলেন।
এর আগে বেসিক ব্যাংকের দুর্নীতি নিয়ে সুপ্রিমকোর্টের কয়েক দফা পর্যবেক্ষণ আসার পর সম্প্রতি বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ নেয় দুদক। প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় ২০১৫ সালের ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন দিনে টানা ৫৬টি মামলা করেন দুদকের অনুসন্ধান দলের সদস্যরা। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় এসব মামলায় ১৫৬ জনকে আসামি করা হয়।
উল্লেখ্য, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল হাই বাচ্চুকে ২০০৯ সালে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয় সরকার। ২০১২ সালে তার নিয়োগ নবায়ন হয়। কিন্তু ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠলে ২০১৪ সালে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফখরুল ইসলামকে অপসারণের পর চাপের মুখে থাকা আবদুল হাই বাচ্চুও পদত্যাগ করেন।