রুবাইয়াত রিক্তা: ব্যাংক খাতের পতনের পর পুঁজিবাজারে মন্দা নেমে এসেছে। এর আগে গত দু’মাসে পুঁজিবাজারের উত্থানে ব্যাংক খাতই একক ভ‚মিকা রেখেছিল। ব্যাংক খাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়তে থাকায় ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারী এ খাতের পেছনে ছোটেন। ফলে অল্প সময়ে ব্যাংক শেয়ারের দর অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়ে। এ কারণে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সীমা অতিক্রম করে যায়। আইন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত হয় সাত ব্যাংক। অন্য ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারিতে চলে আসে। এর ফলে এসব ব্যাংক তাদের বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমায় আনতে শেয়ার বিক্রি শুরু করে। ফলে খুব দ্রুত পতন নেমে আসে বাজারে। এখন তারা শেয়ার বিক্রি করে হাত গুটিয়ে বসে থাকায় বাজার তার গতি হারিয়ে মন্দার কবলে পড়েছে। অনেক শেয়ারের দর বছরের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা হয়তো এই সুযোগের অপেক্ষা করছেন। শেয়ারের দর তলানিতে ঠেকলে তারা বিনিয়োগ শুরু করবেন। গতকাল ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জ (সিএসই) মিলে ব্র্যাক ব্যাংকের প্রায় ১৫৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত এক মাসে ডিএসই বা সিএসইর ওয়েবসাইটে এই ব্যাংকের পরিচালকদের শেয়ার কেনাবেচার কোনো ঘোষণা নেই। অথচ গতকাল ব্যাংকটির এই বিপুল সংখ্যক শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
গতকাল ডিএসইতে ব্যাংক খাতে লেনদেন বেড়েছে ২৫ কোটি টাকা আর ব্র্যাক ব্যাংকের ৪৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা এ খাতে মোট লেনদেনের ৩৩ শতাংশ, আগের দিন যেটি ছিল মাত্র ৯ শতাংশ। গতকাল ব্যাংক ও আর্থিক খাতের দর আগের দিনের তুলনায় কিছুটা ইতিবাচক ছিল। ব্যাংক খাতে ৩৩ শতাংশ এবং আর্থিক খাতে প্রায় ৩৫ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। এছাড়া ওষুধ খাতে ৩৯ শতাংশ এবং প্রকৌশল ও বস্ত্র খাতে ৩৫ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। টেলি যোগাযোগ খাত ছিল ১০০ শতাংশ ইতিবাচক। গতকাল গ্রামীণফোনের দর বেড়েছে ১০ টাকা ৮০ পয়সা, যা সূচকের বড় পতন ঠেকিয়েছে।
প্রকৌশল খাতে দুই শতাংশ বা প্রায় ১১ কোটি টাকা লেনদেন বেড়েছে। এছাড়া বস্ত্র খাতে এক শতাংশ বা তিন কোটি টাকা, ওষুধ ও রসায়ন খাতে এক শতাংশ বা সাড়ে ৯ কোটি টাকা লেনদেন বেড়েছে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বা এক শতাংশ লেনদেন কমেছে।
গতকাল লেনদেনের নেতৃত্বে ছিল ব্র্যাক ব্যাংক। এছাড়া লংকাবাংলার ৩৫ কোটি টাকা, গ্রামীণফোনের ২৫ কোটি, ইফাদ অটোসের ১৮ কোটি, রংপুর ফাউন্ড্রির প্রায় ১৩ কোটি, এসিআইর সাড়ে ১২ কোটি, আমরা নেটের ১২ কোটি এবং শাশা ডেনিমস, বিবিএস কেবল্স ও এক্সিম ব্যাংকের ১০ কোটি টাকার বেশি শেয়ার লেনদেন হয়। গতকাল দরবৃদ্ধির শীর্ষ পর্যায়ে দুর্বল কোম্পানির আধিক্য দেখা গেছে। বি ক্যাটাগরির মুন্নু সিরামিক, ফাইন ফুডস ও সাফকো স্পিনিং শীর্ষ তিনে অবস্থান করে। এছাড়া জেড ক্যাটাগরির ইমাম বাটন, মেঘনা কনডেন্সড মিল্কও দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশে অবস্থান করে।