বাজারের ছন্দপতনে বাংলাদেশ ব্যাংক দায়ী

গত এক বছরে পুঁজিবাজারে বেশ কয়েকবার বড় ধরনের সংশোধন হয়েছে। এর মধ্যে দু’বার বাজার সংশোধনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্রত্যক্ষভাবে দায়ী ছিল। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ফোরকান উদ্দিন, এফসিএ এবং ভ্যানগার্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের এমডি ওয়াকার এ চৌধুরী।

ফোরকান উদ্দিন বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারকে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কারা দায়ী, কেন করেছে এবং কেন এমন হলো এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে প্রথমেই বলতে হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এর জন্য দায়ী। কারণ ব্যাংকগুলোর দৌরাত্ম্যপূর্ণ আচরণের জন্য এটা করা হচ্ছে। ব্যাংকের যেসব সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান আছে তারা জাল বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। পরে ধরা খাওয়ার পর সংশোধন হয়েছে। এর চেয়ে বেশি অনৈতিক কিছু হতে পারে না। তাহলে তারা কেন আইনের আওতায় আসেনি, এটাই আসলে চিন্তার বিষয়। আর এই দৌরাত্ম্যমূলক আচরণ যত দিন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা না যাবে, ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের এই হস্তক্ষেপ থাকবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে একসঙ্গে ১৭টি ব্যাংক যখন জাল বিবৃতি দিয়েছে বলে তারা মনে করছেন, তখন তারা জরিমানা করতে গেলেন। তাহলে এর আগে কি তারা ঘুমিয়ে ছিলেন? যখন সীমা লঙ্ঘিত হচ্ছে বা অতিক্রম করছে, তার আগেই যদি ব্যবস্থা নিতেন, তাহলে বাজারে আজকের এ অবস্থা হতো না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও অর্থনীতিবান্ধব। অর্থনীতি দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। একটি হচ্ছে ঋণভিত্তিক, অন্যটি ইকুইটিভিত্তিক অর্থনীতি। বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণভিত্তিক অর্থনীতি নিয়ে কাজ করে এবং ইকুইটিভিত্তিক অর্থনীতি নিয়ে কাজ করে স্টক মার্কেট। এখন পর্যন্ত ইউএস মার্কেটে ঋণভিত্তিক অর্থনীতির চেয়ে ইকুইটিভিত্তিক অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী এবং জাপানেও তাই। চায়নাও এখন ইকুইটিভিত্তিক অর্থনীতির দিকে যাচ্ছে। তবে ইউরোপিয়ান মার্কেটে আবার ঋণভিত্তিক অর্থনীতি শক্তিশালী। এখন যদি তারা ইকুইটিভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত করতে চায়, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবশ্যই পুঁজিবাজারবান্ধব হতে হবে।

ওয়াকার এ চৌধুরী বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরা লক্ষ করেছি, ব্যাংক খাতের দু-চারটি বাদে সব কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সবাই বুঝতে পারছিলেন, বাজারে কিছুটা দর সংশোধন হয়ে জুন ক্লোজিংয়ের শেয়ারে বিনিয়োগ হবে এবং এটি স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের যে সার্কুলারটি হলো তাতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এখানে আমি মনে করি, বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাব রয়েছে। এই সার্কুলারটি দেওয়ার আগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সমন্বয় করা উচিত ছিল।

শ্রুতি লিখন: রাহাতুল ইসলাম

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০