বাজারে কমেছে সবজির দাম পেঁয়াজের কেজি ১২০ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজারে প্রায় সব সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে। কিন্তু এই সময়ে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৩০ টাকা বেড়েছে। এতে গেল সপ্তাহে যে পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, তা গতকাল ১২০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর যে মানের পেঁয়াজ কেজি প্রতি ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা গতকাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, রমজানের আগে পেঁয়াজের দাম কমার কোনো সম্ভাবনা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার সরেজমিনে ঘুরে বর্তমান বাজারের পরিস্থিতি দেখা যায়। সবজি নিয়ে স্বস্তির কথা জানালেও পেঁয়াজের দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

গতকাল লাল ও সাদা আলু ৩৫ টাকা, দেশি রসুন ২৬০-২৮০ টাকা, চায়না রসুন ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা ২২০, চায়না আদা ২০০-২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় গতকাল আলুর দাম কমেছে ৫ টাকা এবং চায়না রসুনের দাম কমেছে ২০ টাকা।

আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. সেলিম বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম আজ ভালোই বাড়তির দিকে আছে। গত শুক্রবার যেটা ৯০ টাকা বিক্রি করেছি, সেটা আজ সেটা ১২০ টাকা। আমাদের হাতে কিছু নেই। আমরা খুচরা বিক্রি করি। আমরা যে দামে আনি সেখান থেকে লাভ রেখে বিক্রি করি।’

রোজার আগে দাম কমবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোজার আগে দাম কমার কোনো সম্ভাবনা দেখি না। উল্টো বাড়তে পারে।

আরেক বিক্রেতা মজনু বলেন, যখন নতুন পেঁয়াজ উঠে তখন সেগুলো কাঁচা থাকে। তাই দাম কম থাকে। এখন পেঁয়াজ শুকনো হয়েছে তাই দাম বাড়ছে। আরও দাম বাড়বে।

বাজারে আলু-পেঁয়াজ কিনতে এসে কাওসার হোসেন নামের বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, আমি আসলে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনও কারণই খুঁজে পাই না। পেঁয়াজের সিজন চলে গেল, কিন্তু দাম কমল না। অদ্ভুত একটা অবস্থা পার করছি!

গতকাল বাজারে শিম ৬০-৭০ টাকা, শালগম ৫০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৫০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, পেঁয়াজ কলি ৪০ টাকা, মটরশুঁটি ১০০ টাকা, সাদা মুলা ৪০ টাকা, দেশি গাজর ৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০ টাকা, শসা ৮০-১২০ টাকা, ক্ষিরা ৮০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, কচুরমুখি ১২০, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, ধনেপাতা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি লাউ ১০০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, ব্রোকলি ৫০ করে বিক্রি হচ্ছে। দেখা যায় প্রায় সব সবজির দামই কমেছে কেজিপ্রতি ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত।

সবজি বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, গত সপ্তাহের থেকে আজ সব সবজির দামই কমে গিয়েছে। দাম কমলে আসলে ক্রেতাদের যেমন সুবিধা হয় তেমনি আমাদেরও সুবিধা হয়। কোনো সবজি যদি আমরা ৫০ টাকায় কিনি সেটা আমরা অনায়াসেই ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি করতে পারি। কিন্তু কোনো সবজি যদি ৮০ টাকায় কিনি সেটা ১০০ টাকায় বিক্রি করা কঠিন হয়ে যায়।

বেসরকারি চাকরিজীবী আবদুল ওয়াহাব এসেছিলেন বাজার করতে। তিনি বলেন, সবজির দাম অনেকটাই কমে এসেছে। এটা একটা ভালো ব্যাপার। কিন্তু আমাদের বাজারের ওপর তো ভরসা করা যায় না। আজ দাম কম আছে। কালই এসে দেখবেন দাম বেড়ে গিয়েছে। কোনো কিছুরই ঠিক ঠিকানা নেই।

এছাড়া গতকাল বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১৯০০-২২০০ টাকা, রুই মাছ ৩৮০-৫৫০ টাকা,  কাতল মাছ ৪০০-৮০০ টাকা, কালবাউশ ৫০০- ১২০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০-১২০০ টাকা, কাঁচকি ৪৫০ টাকা, কই ২৫০-১২০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০-৬০০ টাকা, শিং ৪০০-১৪০০ টাকা, বেলে মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৮০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, কাজলি মাছ ১১০০-১২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০- ১৩০০

টাকা, রূপচাঁদা ১০০০-১২০০ টাকা, শোল ৭০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

ব্রয়লার মুরগি ১৯৫-২১০ টাকা, কক মুরগি ২৭৫-২৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮৫ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। মুরগির লাল ডিম ১৩৫ টাকা এবং সাদা ডিম ১৩০ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হয়।

মুদি দোকানের সব পণ্যের দাম ছিল অপরিবর্তিত। ছোট মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, মুগ ডাল ১৭৫ টাকা, খেশারি ডাল ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১০০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৩ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৪০, টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০