Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 2:47 am

বাজারে নতুন তারল্য প্রবাহ আসছে

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

দীর্ঘদিন পর পুঁজিবাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির  প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি ইতিবাচক প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। ফলে বাজারে নিত্যনতুন তারল্যের প্রবাহ আসছে। এতে বর্তমানে অনেক কোম্পানির শেয়ারদর বেশ ভালো অবস্থানে গেছে। এটির সঙ্গে আমাদের ম্যাক্রো-ইকোনমির  বেশ কিছু ব্যাপার জড়িত। যেমন, গত দুই বছর ধরে সুদের হারের ক্রমাবনতিশীল ধারা অব্যাহত আছে। যে কারণে কোম্পানির নিজস্ব যে তারল্য প্রবাহ আছে, সেটির ভারসাম্য ফিরেছে। এতে পুঁজিবাজারে নতুন তারল্যে প্রবাহের সঞ্চার হয়েছে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে এ বিষয়টি আলোচিত হয়। আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান এবং আইসিএবির কাউন্সিলর মেম্বার ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হোসেন, এফসিএ।

মো. মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমান বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় আছে বলেই আমার মনে হয়। আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি ইতিবাচক প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। বাজারে নিত্যনতুন তারল্যের প্রবাহ আসছে। ফলে শেষ ৯ মাসে অনেক কোম্পানির শেয়ারদর বেশ ভালো অবস্থানে এসেছে। এটির সঙ্গে আমাদের ম্যাক্রো-ইকোনমির বেশ কিছু ব্যাপার জড়িত। যেমন, গত দুই বছর ধরে সুদের হারের ক্রমাবনতিশীল ধারা অব্যাহত আছে। যে কারণে কোম্পানির নিজস্ব যে তারল্য প্রবাহ আছে, সেটির ভারসাম্য ফিরেছে। এতে পুঁজিবাজারে নতুন তারল্যের প্রবাহের সঞ্চার হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পুঁজিবাজারে টার্নওভারের একটি উত্থান লক্ষ করা গেছে। তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রে সাধারণত নির্ধারিত আয়ের মানুষ বা পেনশনভোগীরা বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন। সরকার সস্তা দরে সিকিউরিটি ইস্যু করে ফাইন্যান্সিং (আর্থিক সংস্থান) করতে পারত। কিন্তু তা না করে বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র বিক্রি করছে। অনেকেই বলেন, সম্পদশালী অনেকেই সঞ্চয়পত্র কিনছেন। কিন্তু আমার মনে হয় এটি একটি সমালোচনা এবং এটি সম্ভব নয়। কারণ সঞ্চয়পত্রের যে নীতিমালা আছে, সেখানে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ করার সুযোগ নেই। এখানে ব্যক্তিপর্যায়ে বা পেনশনভোগী এবং কিছু পৃথক পারিবারিক পর্যায়ে বিনিয়োগ করার সুযোগ আছে। তবে আমাদের দেশে ঝুঁকিবিহীন সঞ্চয়ের অভাব রয়ে গেছে।

মাহমুদ হোসেন বলেন, লক্ষ করলে দেখবেন, সরকারের উদ্দেশ্য ছিল ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ২৯ হাজার কোটি টাকা আদায়ের। সেখানে সঞ্চয়পত্রে নেট বিনিয়োগ হয়েছে ৫২ হাজার কোটি টাকার ওপরে। এটি চূড়ান্তভাবে আমাদের সামগ্রিক অর্থনীতিতে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করেছে। কারণ সরকার সুদেরও বাজেট করেছিল। সেখানে সুদের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। ফলে ম্যাক্রো-ইকোনমির (বৃহদাকার অর্থনৈতিক) ভারসাম্য রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে দুটি শর্ত দেওয়া আছে। এক. যৌথ নামে ও দুই. নাবালকের নামে সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না। কিন্তু এ বিষয়েও সরকার এখন পর্যন্ত কিছু করছে না। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, অনেকেই সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশ দিয়ে পরিবার চালান। তাই সরকারকে চিন্তা করতে হবে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমিয়ে দিলে তাদের কী হবে? বিষয়টি সরকারের গুরুত্বসহকারে দেখা দরকার বলে মনে করি।

 

শ্রুতি লিখন: রাহাতুল ইসলাম