Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:09 am

বাজারে ভালো মানের কোম্পানি আসছে না

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমানে পুঁজিবাজারে যে কোম্পানিগুলো আসছে সেগুলো আসলে ভালো মানের কোম্পানি না। এসব কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসার আগে আয় এবং সম্পদ মূল্যায়ন করে এনএভি বেশি দেখাচ্ছে। কিন্তু যখন কোম্পানিটির বয়স এক থেকে দুই বছর হয়ে গেলে আর ভালো আয় দেখাতে পারছে না। ফলে তখন তাদের আসল রূপ বেড়িয়ে আসে এবং  বিনিয়োগকারীরা বিপদে পড়ে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিওও ফাহমিদা হক এবং পিএলএফএস ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সিইও মো. আবদুল মুকতাদির সিএফএ।

ফাহমিদা হক বলেন, অনেক দিন পর বাজার ভালোর দিকে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে আমরা আসলে সবাই আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম। মার্কেট কোন দিকে যাচ্ছে এবং কী হবে তা নিয়ে। এখন টার্নওভার বাড়ছে। যেহেতু টার্নওভার বাড়ছে তাই বাজার ভালোর দিকে যাবে বলেই সবাই আশা করছে। আসলে এটা  নির্ভর করে অনেক বিষয়ের ওপর। তিনি আরও বলেন, কৌশলগত বিনিয়োগকারী এলে বাজারে ভালো মানের বিনিয়োগ উপযোগী শেয়ার আসবে।

মো. আবদুল মুকতাদির বলেন, একটি পুঁজিবাজারের ভালো মন্দ নির্ভর করে ওই দেশের অর্থনীতির ওপর। প্রথমত আমাদের দেশের অর্থনীতির অবস্থা কেমন, কোম্পানিগুলো আয় করছে কি না। তারপর আসে চাহিদা এবং সরবরাহ। আমাদের অর্থনীতিতে গত ১০ বছরে প্রায় ছয় দশমিক ৫০ শতাংশ গ্রোথ রেট দেখেছি। বর্তমানে প্রায় সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ গ্রোথ। যে দেশে সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ গ্রোথ সেখানে বেশিরভাগ কোম্পানি ভালো মুনাফা করে। যখন কোম্পানিগুলো ভালো করবে তখন ওই কোম্পানির শেয়ারদর বাড়বে। এটা একটি সাধারণ বিষয়। আমরা যদি ২০১০ সালের দিকে তাকাই, তখন মার্কেট পতন হয়েছিল। সে সময় কোম্পানিগুলোর যে মুনাফা ছিল আর ২০১৭ সালের বছর শেষের বা প্রান্তিকের যে হিসাব তাতে আগের চেয়ে মুনাফা অনেক বেড়েছে। গত পাঁচ মাসে পুঁজিবাজারে যে সংশোধন হয়েছে তার মূল কারণ ছিল তারল্য সংকট।  মার্চ মাসের শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, বিএসইসি যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে আবার মার্কেটে মানি সরবরাহ বাড়বে এবং বাড়ার জন্যই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারে যে কোম্পানিগুলো আসছে সেগুলো আসলে ভালো মানের কোম্পানি না। এগুলো আসলে জেড গ্রুপে যাওয়ার মতো কোম্পানি। যখন কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসে তখন তারা আয় বেশি দেখায় এবং সম্পদ মূল্যায়ন করে এনএভি বেশি দেখাচ্ছে। প্রথম এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকে আয় ভালো দেখাচ্ছে বাজারে চাহিদা তৈরির জন্য। কিন্তু যখন কোম্পানিটির বয়স এক থেকে দুই বছর হয়ে যায় তখন আর ভালো আয় দেখাতে পারছে না। ফলে কোম্পানির আসল রূপ বেড়িয়ে আসে এবং তখনই বিনিয়োগকারীরা বিপদে পড়ে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বছরে এক থেকে দুটি কোম্পানি পুঁজিবাজার আনতে হয়। যখন ভালো কোম্পানি আনতে না পারে তখনই কম মূলধনি এসব কোম্পানিকে আনছে।

আমাদের পুঁজিবাজার আসলে সম্পূর্ণ ইকুইটি নির্ভর।  এখানে বন্ড নাই, ডেরিভেটিভস নেই, কমোডিটি বিনিয়োগ করতে পারি না। কৌশলগত বিনিয়োগকারী এলে তারা তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমাদের বাজারের উন্নয়ন করবে।