বাজারে ভালো শেয়ারের অভাব রয়েছে। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে বাজারে ভালো শেয়ার আনা খুবই জরুরি। রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোসহ বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনা দরকার। বড় কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করা গেলে বাজারের গভীরতা অনেক বাড়বে। আর বাজারে ভালো কোম্পানিগুলো আনার দায়িত্ব মার্চেন্ট ব্যাংকারদের; কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের ভালো কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। গতকাল মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে এ তথ্য উঠে আসে। এতে আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ লিজিং অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আসাদ খান ও ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও মোহাম্মদ আলী, এফসিএ।
অনুষ্ঠানটি গ্রন্থনা, সঞ্চালনা ও সম্পাদনা করেন হাসিব হাসান।
আসাদ খান বলেন, দেশের আর্থিক খাত উভয় সংকটে থাকে। কখনও তারল্য অতিরিক্ত হয়ে যায়; আবার কখনও সংকট থাকে। তার মানে এটি স্থতিশীল নয়। আর আর্থিক খাত স্থিতিশীল না থাকলে লিজিং খাত একটু সমস্যার মধ্যেই পড়ে যায়। তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ সালের দিকে বাজারে অতিরিক্ত তারল্য হওয়ায় ব্যাংকগুলো আমাদের থেকে রিফাইন্যান্সিং করে গ্রাহকদের নিয়ে গেছে। তাছাড়া আমাদের রেট সব সময় মার্কেটে ব্যাংকের যে রেট আছে, তার থেকে দুই শতাংশ বেশি থাকে।
পরবর্তীকালে ২০১৭ সালের শেষদিক থেকে ২০১৮ সালে এসে তারল্য সংকট হয়ে গেছে। এতে সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের এখানে যারা টাকা লেন্ডিং করেছেন, তারা সব অর্থ ফেরত নিয়ে গেছেন। আমাদেরই প্রতিষ্ঠান প্রাইম ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের মধ্যে গত তিন মাসে যেসব ডিপোজিটররা লিজিং খাতে টাকা রেখেছিলেন, তারা প্রায় ২০০ কোটি টাকা ফেরত নিয়ে গেছেন। তাই স্থিতিশীল বাজার না থাকলে লিজিং খাত সব সময়ই এ সমস্যার মধ্যে থাকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সুদহার কেন বেশি? কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিন বা ছয় মাসের ফিক্সড ডিপোজিট আমরা ব্যাংক থেকে নিই এবং আমাদের পেমেন্ট কমিটমেন্ট সব সময় ঠিক রাখতে হয়। কারণ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে টাকা ফেরত দিতে পারে না। এমন যদি হয়, তাহলে বাজারে আমাদের ওপর একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে সবার। যে কারণে এটিকে আমরা সব সময়ই পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্ট করি। অনেক সময় এমনও হয় যে, লেন্ডিং রেট বড় করেও পেমেন্ট কমিটমেন্ট ঠিক রাখি।
মোহাম্মদ আলী বলেন, সুদহার যদি সিঙ্গেল ডিজিটে আসে, তাহলে পুঁজিবাজারের কিছুটা প্রবৃদ্ধি হবে। এছাড়া সিআরআর (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও) এক শতাংশ কমানোয় একটি নির্দিষ্ট সময় পর বাজারে কিছুটা ইতিবাচাক প্রভাব আসবে। সম্প্রতি আরও কিছু নীতিমালা হয়েছে, যা বাজারে সুফল বয়ে আনবে বলে মনে করি। তবে বাজারে ভালো শেয়ারের অভাব রয়েছে। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে বাজারে ভালো শেয়ার আনা খুবই জরুরি হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোসহ বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনা দরকার। আর এগুলো যদি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা যায়, তাহলে বাজারের গভীরতা অনেক বাড়বে বলে মনে করি। আর বাজারে ভালো কোম্পানিগুলো আনার দায়িত্ব মার্চেন্ট ব্যাংকারদের কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের ভালো কর্মক্ষমতা আমরা দেখতে পারছি না।
শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম