নিজস্ব প্রতিবেদক : শীতের সবজি বাজারে আসার পরও বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। কয়েকটি সবজির দাম কমলেও বেশি কিছু সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে সবজির দাম ছিল বাড়তি, এ সপ্তাহেও একই অবস্থা বিরাজমান। বিক্রেতারা দাম বাড়ার কারণ সুস্পষ্টভাবে বলতে না পারলেও ক্রেতারা বলছেন, যে দামই হোক; তারা কিনতে বাধ্য।
এদিকে বাজারে নতুন পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়েছে। এতে কমতে শুরু করেছে পুরান পেঁয়াজের দাম। যে পেঁয়াজ পাঁচ থেকে ছয় দিন আগে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল, সেই পেঁয়াজ গতকাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।
গতকাল শুক্রবার মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় বাজারের এই চিত্র।
গতকাল বাজারে শিম ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শালগম ৪০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৫০ টাকা, টমেটো ১০০-১২০ টাকা, পেঁয়াজ কলি ১২০ টাকা, পেঁয়াজ পাতা ৮০ টাকা, মটরশুঁটি ২০০ টাকা, মূলা ৪০ টাকা, লাল মুলা ৬০ টাকা, দেশি গাজর ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকা, পটোল ৭০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা, ধনেপাতা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি লাউ ৯০-১০০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, পেঁয়াজ কলি ২০ টাকা, লাল মূলা ১০ টাকা, লম্বা বেগুন ১০ টাকা, ঢ্যাড়স ২০ টাকা, চিচিঙ্গা ২০ টাকা, ফুলকপি ১০ টাকা, লাউ ২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে শিম ২০ টাকা, শালগম ১০ টাকা, গোল বেগুন ২০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ৮০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা হারুন বলেন, সবজির দাম আসলে ওঠানামা করে। সব সময় তো আর এক থাকে না।
দাম বাড়তি থাকার বিষয়ে আরেক বিক্রেতা সোহেল বলেন, দাম তো আর আমরা বাড়াই না। আমরা বেশি দামে কিনি বলেই বেশি দামে বিক্রি করি।
এদিকে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করায় কমতে শুরু করেছে পুরান পেঁয়াজের দাম। গতকাল বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৪০ টাকা, নতুন পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নতুন আলু ৫০ ও পুরান সাদা আলু ৫৫ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।
আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা শরীফ বলেন, আমার পেঁয়াজ কেনা আছে ২০০ টাকা কেজিতে। কিন্তু বিক্রি করতে হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আমার প্রতি কেজিতে ৬০ টাকা লস হচ্ছে। এ সময় তিনি তারা কেনার রশিদও বের করে দেখান।
পেঁয়াজ কিনতে আসা মফিজুর রহমান ব্যবসায়ীদের দিকে অভিযোগ তুলে বলেন, নতুন পেঁয়াজ উঠে যাওয়ায় যেসব পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রির জন্য স্টক করে রেখেছিল সেগুলো এখন বের করে কম দামে বিক্রি করছে। এখন বিক্রি করতে না পারলে তো যেগুলো স্টক করেছে সেগুলো পচে যাবে। তাই এখন বের করা শুরু করেছে।
এদিকে এক রকম নীরবেই বেড়ে গিয়েছে রসুনের দাম। আজ দেশি রসুন ২৮০, চায়না রসুন ২২০, ভারতীয় আদা ২২০, চায়না আদা ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, এক লাফে দেশি রসুনের দাম ৪০ ও চায়না রসুনের দাম ২০ টাকা বেড়ে গেছে।
এছাড়া গতকাল বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা, রুই মাছ ৩৮০-৬০০ টাকা, কাতল মাছ ৩৮০-৪৫০ টাকা, কালবাউশ ৪৫০-৭০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৭০০-১৩৫০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪৫০ টাকা, কৈ মাছ ২০০-৫০০ টাকা, পাবদা মাছ ৩৫০-৮০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৫০০ টাকা, বেলে মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, ট্যাংরা মাছ ৬০০-৮০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, কাজলি মাছ ১২০০-১৪০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬০০- ১২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১০০০-১৩০০ টাকা, শোল মাছ ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা, কক মুরগি ২৯৫-৩০৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৭০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, গরুর মাংস ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা, সাদা ডিম ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল মুদি দোকানের সব পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১৫ টাকা, মুগ ডাল ১৪৫ টাকা, খেশারি ডাল ৯৫ টাকা, বুটের ডাল ৯৫ টাকা, ছোলা ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৯-১৭৩ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৪২, টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫৫ থেকে ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।