বাজার চাঙা রাখতে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

দেশের অর্থনীতির সিংহভাগ ব্যক্তি খাতের দখলে। ফলে কর্মসংস্থানও এ খাতে বেশি। আর এ খাত চাঙ্গা থাকলে পুঁজিবাজারের অবস্থাও ভালো থাকে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে পারলে পুঁজিবাজার চাঙ্গা হবে। একই সঙ্গে ঋণ অবলোপন হার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এমন মত উঠে আসে গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ প্রোগ্রামে। আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মো. ফোরকান উদ্দিন, এফসিএ।

ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ২০১৭ সালে দেশের সার্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আমরা বহাল রাখতে পেরেছি। এটি একটি বৃহৎ অর্জন। তবে রেমিট্যান্স, বস্ত্র ও পোশাক খাতের রফতানি ও কৃষির মধ্যে দুটিতে তুলনামূলকভাবে ভালো করতে পারিনি। রেমিট্যান্স ও রফতানির প্রবৃদ্ধিতে গত বছর একটি বড় ধরনের হোঁচট খেয়েছি আমরা। এ কারণে সার্বিকভাবে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও প্রবৃদ্ধি বহাল রাখতে পেরেছি এটাই আমাদের একটি ইতিবাচক দিক। বর্তমানে দেশের মোট বিনিয়োগ জিডিপির ২৮-২৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে। বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সরকারি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি বড় ভূমিকা রেখেছে। আর ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ চার-পাঁচ বছর ধরে ২২ শতাংশের আশপাশ দিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। ব্যক্তি খাত পুঁজিবাজারের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। কিন্তু সেখানে বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি সঠিকভাবে হচ্ছে না। আর এ খাতে বিনিয়োগ না বাড়লে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। লক্ষ করলে দেখবেন, সাত-আট বছর আগে যে হারে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো, তা এখন হয় না। কাজেই এটি একটি ভয়াবহ অবস্থা। কারণ এটির ফলে দেশে বেকারত্ব বেড়ে গেছে। আর বেকারত্ব বাড়লে দেশে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

মো. ফোরকান উদ্দিন বলেন, ২০০৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মোট ৪৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। আর অবলোপন করা মানে, যাদের অবলোপন করা হলো তাদের মুক্তি দেওয়া হলো। তাছাড়া অবলোপন না করা হলে ব্যাংকের ব্যালেন্স শিট ফুলে-ফেঁপে থাকত, যা একটি জাল ব্যালেন্সশিট হতো। এতে যে ঋণগুলো শ্রেণীকৃত করা হয়েছিল সেগুলোর ওপর যে লভ্যাংশগুলো প্রতিনিয়ত চার্জ করে যাচ্ছে সেগুলো কিন্তু আবার ইনকামে নিয়ে চার্জ করত। এতে চূড়ান্তভাবে যখন ওখান থেকে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হতো তখন ওটা আমানতকারীদের অর্থ থেকেই চলে যেত। সেদিক বিবেচনায় অবলোপন ঠিক আছে। তবে আমি মনে করি আমানতকারীদের অর্থ যাতে না যায়, সে জন্য অবলোপন করে দিয়ে তাদের পেছনে লেগে থাকতে হবে অর্থ আদায়ের জন্য। তিনি বলেন, আমাদের জীবনযাত্রার ব্যয় প্রায় ৮.৪৪ শতাংশ, সেবার ব্যয় প্রায় ৭.১৭ শতাংশ এবং চালের মূল্য গড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে ২০.৪৪ শতাংশ। এতে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের ওপর ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অন্যদিকে তদারকির অভাবে গত ৯ মাসে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকার মতো।

 

শ্রুতি লিখন: রাহাতুল ইসলাম

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০