বাজার থেকে মূলধন কমেছে ২১ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক ১২টি কোম্পানির মধ্যে গত সপ্তাহে সবগুলো কোম্পানিরই শেয়ারদর কমেছে। শেয়ারদর কমে যাওয়া এই ১২ কোম্পানির মধ্যে রয়েছেÑলাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো বাংলাদেশ, সিঙ্গার বিডি, বাটা শু, আরএকে সিরামিক, গ্রামীণফোন, লিনডে বিডি, রেকিট বেনকিজার, ম্যারিকো, বার্জার পেইন্টস, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট এবং ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ার লিমিটেড।

গত রোববার হাইডেলবার্গ সিমেন্টের শেয়ারদর ছিল ২৪০ টাকা ৬০ পয়সা, যা বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষ হয় ২১০ টাকা ৯০ পয়সায় নেমে যায়। এই হিসাবে কোম্পানিটির দর কমেছে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বা ২৯ টাকা ৭০ পয়সা। সিরামিক খাতের কোম্পানি আরএকে সিরামিকস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের শেয়ারের উদ্বোধনী দর ১৬ মে ছিল ৪৫ টাকা ৮০ পয়সা, যা বৃহস্পতিবার কমে সমাপনী দর দাঁড়ায় ৪১ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর কমেছে ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ বা ৪ টাকা ৮০ পয়সা। বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর। গত ১৬ মে শুরুতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৫৭৯ টাকা ২০ পয়সা, যা বৃহস্পতিবার সর্বশেষ কার্যদিবসে কমে দাঁড়ায় ৫৩৯ টাকা ৫০ পয়সায়। সপ্তাহের ব্যবধানে ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ বা ৩৯ টাকা ৭০ পয়সা কমেছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি লিন্ডে বিডি ১৬ মে শেয়ারদর ছিল ১ হাজার ৪৬২ টাকা ৩০ পয়সা; যা বৃহস্পতিবার কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৪০৩ টাকা ৪০ পয়সায়। এই হিসাবে কোম্পানিটির শেয়ারের দর কমেছে ৪ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ বা ৫৮ টাকা ৯০ পয়সায়। ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি রেকিট বেনকিজারের শেয়ারদর ১৬ মে তারিখে ছিল ৪ হাজার ৯৯৯ টাকা ৫০ পয়সা, যা বৃহস্পতিবার কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮০৬ টাকায়। এক সপ্তাহে দর কমেছে ৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ বা ১৯৩ টাকা ৫০ পয়সা। ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ারে ১৬ মে শেয়ারদর ছিল ২ হাজার ৮৬৯ টাকা ৩০ পয়সা, যা বৃহস্পতিবার কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৬৯ টাকা ৭০ পয়সায়। এই হিসাবে কোম্পানিটির দর কমেছে ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ বা ৯৯ টাকা ৬০ পয়সা।

টেলিযোগাযোগ কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেডের ১৬ মে শেয়ারদর ছিল ৩১০ টাকা ৩০ পয়সা, যা বৃহস্পতিবার কমে দাঁড়ায় ৩০২ টাকা ৬০ পয়সায়। দর কমেছে ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ বা ৭ টাকা ৭০ পয়সা। সিমেন্ট খাতের কোম্পানি লাফার্জহোলসিমের শেয়ারদর সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ছিল ৭৪ টাকা ৬০ পয়সা, যা বৃহস্পতিবার কমে দাঁড়ায় ৭৩ টাকা ১০ পয়সায়। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বা ১ টাকা ৫০ পয়সা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে লেনদেন  দরপতনের মধ্য দিয়ে পার করেছে দেশের পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৯ হাজার ৮৭২ কোটি টাকায়; যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ৩১ হাজার ১২ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা।

বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গেল সপ্তাহে ডিএসইতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া মাত্র ২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দর কমেছে ৩৬০টির। আর ৬টির দর অপরিবর্তিত ছিল।

এতে গেল সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩০৭ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৯০ দশমিক ২০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৬ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ। অর্থাৎ তিন সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক হারিয়েছে ৪০৩ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮০৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২৭০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বা ২৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।

আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ২৩৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫ হাজার ৩৯৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ২ হাজার ১৬২ কোটি ২০ লাখ টাকা বা ৪০ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে কমার কারণ, গত সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০