Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 1:12 pm

বাজার ভালো করতে এসইসিকে নতুন করে গড়তে হবে

বাজার ভালো করতে হলে প্রথমে এসইসিকে ভেঙে নতুন করে গড়তে হবে এবং চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ্য ও সৎ মানুষ আনতে হবে। বাজার পুনরুদ্ধারের জন্য রেগুলেটরের নেতৃত্বে ব্যক্তিসম্পন্ন মানুষ আনতে হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।

মোশতাক সাদেকের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, তহবিলের জন্য পুঁজিবাজার নষ্ট হয়নি বরং আস্থা সংকটের জন্য হয়েছে। যে দেশের প্রবৃদ্ধি আট শতাংশের উপরে সেখানে মানুষের কাছে অর্থ রয়েছে। বাজারে টাকা আসবে মানুষের কাছ থেকে। আস্থা থাকলে এ বাজারে টাকা আসবে, না হলে কোনোভাবেই আসবে না। সেখানে কৃত্রিমভাবে ব্যাংককে টাকা দিলে যতদিন ওই টাকা থাকবে ততদিন বাজার ভালো থাকবে। ওই টাকা শেষ হলে আবার খারাপ হবে। তবে বাজার যে অবস্থানে চলে গিয়েছিল তাতে এ অর্থ আসাকে একদম অবমূল্যায়ন করা যায় না। কিন্তু এ সময়ে বাজারের প্রতি মানুষের আস্থা আনতে যা করা দরকার সেসব কিছু করা জরুরি। দেখুন যেখানে বিএসইসির চেয়ারম্যান দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন সেখানে তৃতীয় মেয়াদেও দায়িত্বরত। যেখানে আইন মানা হচ্ছে না সেখানে বাজারে সুশাসন কীভাবে আসবে? বাজার ভালো করতে হলে প্রথমে এসইসিকে ভেঙে নতুন করে গড়তে হবে এবং চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ্য ও সৎ মানুষ আনতে হবে। বাজার পুনরুদ্ধারের জন্য রেগুলেটরের নেতৃত্বে ব্যক্তিসম্পন্ন মানুষ আনতে হবে।

ড. মিজানুর রহমান বলেন, বাজারের তারল্য সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ প্রণোদনা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এটাকে কার্যকর করতে স্টক মার্কেটের অবকাঠামোগত সমস্যা, সুশাসনসহ যেসব কারণে বিনিয়োগকারীরা পুঁজি হারিয়েছে সেসব বিষয়গুলোর যথাযথ বন্দোবস্ত করা জরুরি। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সুশাসন এবং তাদের তারল্য সংকটের মৌলিক কারণগুলো না বুঝে বা বন্দোবস্ত না করে মার্কেটে নতুন তারল্যপ্রবাহ দীর্ঘ মেয়াদে সমস্যার সমাধান হবে না। বিনিয়োগকারী আছেন এবং তহবিলও আছে কিন্তু তারা কেউ বাজারের দিকে ধাবিত হচ্ছে না। কারণ মানুষ বারবার পরীক্ষামূলকভাবে বাজারে এসে বিনিয়োগ করে এবং সর্বশান্ত হয়। কারণ আমরা প্রাইমারি বাজার ধ্বংস করেছি। গত ১০ বছরে অনেক কোম্পানি বাজারে আসার পর তাদের আয়, মুনাফা, নগদ অর্থপ্রবাহ সবকিছু নেতিবাচক হয়েছে। রেগুলেটরদের উচিত ছিল যেসব কোম্পানির সুশাসন আছে, ভবিষ্যতে ভালো করবে এমন কোম্পানি নিয়ে আসা। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগযোগ্য কোম্পানি উপহার দেওয়া। সেখানে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। যারা ওইসব কোম্পানি বাজারে এনেছে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। না হলে বিনিয়োগকারীদের আর  বাজারমুখী করা সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, ডিএসইর ম্যানেজমেন্ট বোর্ড থেকে আলাদা নয়। বোর্ডের দ্বারা ম্যানেজমেন্ট নিয়ন্ত্রিত হয়। আবার বোর্ডের শেয়ারহোল্ডার ডিরেক্টররাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। ওইখানে স্বতন্ত্র পরিচালকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন না। এমনকি গত ১০ বছরে ডিএসইর কোনো ধরনের ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট হয়নি। কারণ বোর্ড এবং ম্যানেজমেন্টের মধ্যে সম্পূর্ণ পৃথকীকরণ হয়নি।      

শ্রুতিলিখন: পিয়াস