পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি দুটি বিষয়ের ওপর মূল্যায়ন করা হয়। একটি হচ্ছে সূচক কোন দিকে অগ্রসর হচ্ছে, আরেকটি বাজার মূলধন কতটা বৃদ্ধি পাচ্ছে ও টার্নওভার কতটা বাড়ছে। কিন্তু সূচক, বাজার মূলধন এবং টার্নওভার কোনোটারই অগ্রগতি হচ্ছে না। বরং সূচক ও টার্নওভার কমে যাচ্ছে। পুঁজিবাজার পরিবর্তন আনতে হলে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রথমত, বাজারে ভালোমানের ইকুইটি আনতে হবে। তাদের বিভিন্নভাবে বাজারে আসার জন্য উৎসাহিত করতে হবে এবং সক্রিয় থাকতে হবে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে ব্যাংক খাত, এ খাতের সমস্যা সমাধান না হলে পুঁজিবাজার গতি ফিরে পাবে না। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
সাংবাদিক হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব সালমা নাসরীন, এনডিসি।
ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক খাতে ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। অর্থমন্ত্রী বেশ কিছু দিন আগে বলেছিলেন ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আর বাড়বে না। তারপরেও কিন্তু অনেক বেড়েছে। এখন ব্যাংক খাতে তারল্য সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। আবার বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি প্রত্যেক মাসে কমে আসছে। এখন ১১ শতাংশের মতো রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের টার্গেট ছিল ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। এর মূল কারণ ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। যার ফলে ব্যাংকে তারল্য সংকট রয়েছে। যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী ভূমিকা পালন করত, তাহলে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এতটা বাড়ত না এবং এ রকম অবস্থা বিরাজ করত না। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি দায়িত্ব থেকেই যাচ্ছে। পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বেশ সক্রিয় হতে দেখা গেছে। কিন্তু বাজারে তার ইতিবাচক কোনো ফল দেখা যাচ্ছে না। সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে ভালো কোম্পানি আনার জন্য বিশেষ কোনো উদ্যোগ দেখছি না। সাবেক অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, পুঁজিবাজারে সরকারি প্রায় ২৫ থেকে ২৬টি কোম্পানি আসবে। কিন্তু কয়েক বছর হয়ে গেল এখন পর্যন্ত একটি কোম্পানিও বাজারে আসেনি। সার্বিকভাবে বলা হচ্ছে সরকারি পর্যায়ে দুর্বলতা বা ব্যর্থতা রয়েছে। এর ফলে বাজারের এমনটা ঘটছে।
পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি দুটি বিষয়ের ওপর মূল্যায়ন করা হয়। একটি হচ্ছে সূচক কোন দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আরেকটি হচ্ছে বাজার মূলধন কতটা বৃদ্ধি পাচ্ছে ও টার্নওভার কতটা বাড়ছে। কিন্তু সূচক, বাজার মূলধন এবং টার্নওভার কোনোটারই তেমন অগ্রগতি হচ্ছে না। বরং সূচক ও টার্নওভার কমে যাচ্ছে। পুঁজিবাজার পরিবর্তন আনতে হলে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রথমত, বাজারে ভালোমানের ইকুইটি আনতে হবে। তাদের বিভিন্নভাবে বাজারে আসার জন্য উৎসাহিত করতে হবে এবং সক্রিয় থাকতে হবে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে ব্যাংক খাত। এ খাতের সমস্যা সমাধান না হলে পুঁজিবাজারে গতি ফিরে পাবে না।
সালমা নাসরীন বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংককে মুদ্রানীতি এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে পুঁজিবাজার ভালোভাবে পারফরম্যান্স করতে পারে। আর পুঁজিবাজার, বন্ড মার্কেট এবং ব্যাংক এ তিনটি খাতকে একটি শক্তিশালী সমন্বয়ের মাধ্যমে এগোতে হবে। এ তিনটি বিষয়ে সমস্যা রেখে জিডিপির গ্রোথের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ