নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসে দরপতন হয়েছে। এরপরও সপ্তাহজুড়ে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় থাকলেও বাজার মূলধন বড় অঙ্কে কমেছে। এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কমল।
ডিএসইতে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে। তবে কমেছে অপর দুই সূচক। মূল্যসূচক মিশ্র থাকলেও বেড়েছে লেনদেনের গতি। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৪টির। আর ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার পরও সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৬৫২ কোটি টাকায়। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৬ লাখ ৭১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৭ হাজার ৪১১ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ১০ শতাংশ।
আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা। তার আগের সপ্তাহে বাড়ে ১৭ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা এবং তার আগের সপ্তাহে অর্থাৎ ঈদের পর লেনদেন হওয়া দুই কার্যদিবসে বাজার মূলধন বাড়ে ১০ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। ফলে ঈদের পর প্রথম তিন সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ১১ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ৩৭ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা।
ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে বেড়েছে ৯ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা দশমিক ১৭ শতাংশ। গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৪২ দশমিক ১৫ পয়েন্ট। তার আগের দুই সপ্তাহে বাড়ে ১১১ দশমিক ২৮ পয়েন্ট এবং ১২৬ দশমিক ৩১ পয়েন্ট। অর্থাৎ ঈদের পর চার সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৩৮৮ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি কমেছে ৮ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৮ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে বাড়ে ৪৭ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট এবং ৫৩ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট।
ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও গত সপ্তাহে কমেছে। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ১ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা দশমিক ১০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৫ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১৩ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে বাড়ে ৩৭ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট এবং ৩৪ পয়েন্ট।
মূল্যসূচক মিশ্র থাকলেও লেনদেনে গতি বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৮৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৬১৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২৭৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বা ৪৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ২১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।
লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে স্যালভো কেমিক্যাল, লাভেলো আইসক্রিম, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ফারইস্ট নিটিং, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং আফতাব অটোমোবাইল।