বাজার স্থিতিশীলে সচেতন হোন ক্রেতারা

গরু ও খাসির মাংসের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় নীলফামারীতে নিম্ন আয়ের মানুষ কাটা ব্রয়লার মুরগির মাংসের দিকে ঝুঁকছে গতকাল শেয়ার বিজের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। সেখানে একাধিক স্থানে গরুর মাংসের মতো চৌকিতে করে মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পক্ষে বড় আস্ত মুরগি কেনা সম্ভব নয় বলেই এভাবে বিক্রি করা মাংস জনপ্রিয় হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি কেজি কাটা মুরগির মাংসের দাম পড়ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। অন্যদিকে ওই এলাকায় গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪০ টাকায়। এতে অনেকটা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির চাহিদা।

গত দশক থেকে দেশে ব্রয়লার মুরগির জনপ্রিয়তা বেড়েছে। খামারে ব্যাপক উৎপাদন করা যায় বলে এর মূল্য দেশি মুরগির তুলনায় অনেকটা কম। প্রথমদিকে শহরাঞ্চলে নতুন প্রজšে§র কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করলেও দেশি মুরগি খেতে অভ্যস্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষ এটি তেমন পছন্দ করতো না। লাভজনক হওয়ায় ব্রয়লার উৎপাদনে বিনিয়োগ করেন বহু ব্যবসায়ী। এতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জন্মানো দেশি মুরগির চেয়ে যথেষ্ট কম দামে বাজারজাত করা সম্ভব হয়। দেশি মুরগির চেয়ে মাংস অনেক বেশি হওয়ায় গ্রামাঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষও ধীরে ধীরে ব্রয়লারে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। মহানগরী ও মফস্বলে গড়ে ওঠা ফাস্টফুড দোকানের অন্যতম আকর্ষণ ব্রয়লার মুরগির তৈরি ‘ফ্রাইড চিকেন’। গরু বা খাসির মাংসের অন্য আইটেমের তুলনায় এটির দাম কম। ব্রয়লারের বাজার বড় হওয়ায় এক সময় গরুর মাংসের চেয়ে অধিক দামে বিক্রি হওয়া মুরগির মাংসের বাজার এখন সম্পূর্ণ বিপরীত। তবে অতিরিক্ত বিনিয়োগে উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় মুরগি খামারিরা উৎসাহব্যঞ্জক দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। গরুর মাংসের দাম বাড়ায় মুরগির চাহিদা যেহেতু বেড়েছে, সেহেতু এর খামারিরা এখন কিছুটা ভালো দাম পাবেন বলে মনে করছেন বাজার-সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হওয়ার বেশ কিছুদিন পরও মাংসের বাজার স্থিতিশীল ছিল। গত কোরবানি ঈদের চাহিদাও মেটানো হয়েছিল প্রধানত দেশি গরু দিয়ে। কিন্তু হঠাৎ করে গরুর মাংসের দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীরা দায়ী করছেন হাটের ইজারাদার কর্তৃক অতিরিক্ত খাজনা আদায়, চাঁদাবাজি, হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তর না হওয়ায় চামড়ার দাম কম হওয়া প্রভৃতি বিষয়কে। ক্রেতারা অবশ্য মনে করছেন, এসব অজুহাতে অতিরিক্ত মুনাফার লোভে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়েছেন গরুর মাংসের দাম।

বাজারে যে কোনো পণ্যের দামে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ক্রেতাদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কিছুদিনের জন্য গরুর মাংস খাওয়া বন্ধ করলে বা নিদেনপক্ষে কমিয়ে দিলে অর্থনীতির নিয়মেই সেটির দাম স্বাভাবিক হওয়ার কথা। এক্ষেত্রে ভোক্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) মতো সংগঠন। শুধু পণ্যের দাম বাড়ার রিপোর্ট না করে দাম কমার রিপোর্ট করলেও মানুষ উৎসাহী হতো যে পণ্যের দাম কমেছেÑসেটি কেনায়। এতে আমরা পেতাম স্থিতিশীল স্থানীয় বাজার।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০