বাজেটে গাড়ি ব্যবহারে অতিরিক্ত আয়কর প্রত্যাহার চায় বারভিডা

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে গাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত অতিরিক্ত আয়কর প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকলস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। একই সঙ্গে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ ও কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে সরকারের ব্যয় সংকোচন এবং আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থাপনায় সৃজনশীল পদক্ষেপ নেওয়া বিশেষ জরুরি বলে মনে করছে বারভিডা। গত সোমবার প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় সংগঠনটি।

বারভিডা মনে করে, দেশের রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজার উজ্জীবিত করার জন্য ঋণপ্রবাহ সহজ করতে হবে। এক্ষেত্রে বারভিডা সরকার ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনার পরিমাণ, আকার এবং ব্যাপ্তি বাড়িয়ে এতে সব ব্যবসায়ী, আমদানিকারক ও ট্রেডারদের সমান সুযোগ দেওয়ার দাবি জানায় সংগঠনটি। একই সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি খাতে পূর্বের শুল্ক ও কর বহাল রাখা হয়েছে, যা গাড়ির বাজার স্থিতিশীল রাখতে বিশেষ সহায়ক হবে বলে সংগঠনটি অর্থমন্ত্রী এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানায়। তবে গাড়ি কেনার পর গাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আয়কর বাড়ায় এক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে বারভিডা। গাড়ির ওপর নির্ভর করে অনেক মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তাই বারভিডা গাড়ির ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত অতিরিক্ত আয়কর প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানাচ্ছে। এছাড়া, কাক্সিক্ষত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যে বারভিডা সবসময়ই আয়করের পরিধি বাড়ানোর কথা বলে আসছে।

বারভিডা জানায়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের বিপুল ব্যয় এবং আগামী অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যথাযথ রাজস্ব দেওয়ার মাধ্যমে সংগঠনটি সরকারের পাশে থাকতে চায়। এক্ষেত্রে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরে বারভিডার আমদানি করা যে আট হাজার গাড়ি ইয়ার্ডে রক্ষিত আছে, সেগুলোর এপ্রিল ও মে মাসের বন্দর ভাড়া মওকুফ করা হলে গাড়িগুলো ছাড়করণের শুল্ক ও কর বাবদ সরকার এক হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আহরণ করতে পারে।

সংগঠনটি মনে করে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বৈশ্বিক কাঠমোতে যে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে, তাতে দেশের প্রশাসনিক কাঠামোয় ইতিবাচক পরিবর্তন সাধন, সরকারের ব্যয় সংকোচন, উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী শ্রেণিকে প্রাধান্য দেওয়া এবং সৃজনশীলতার সঙ্গে দেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা এক পরিবর্তিত, বৈষম্যহীন ও কল্যাণমূলক বাংলাদেশ গঠন করতে সক্ষম হবো।

এদিকে, রিকন্ডিশন্ড এবং নতুন গাড়ির শুল্কায়ন মূল্যে নানা বৈষম্যের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নতুন গাড়ির চেয়ে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্ক-কর কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনেক বেশি হওয়ায় রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ক্রেতা কমে যাওয়ায় আমদানি ক্রমাগতভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং এ খাতের ব্যবসায়ীরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে আসছেন। গাড়ি আমদানি কমে যাওয়ায় সরকারের রাজস্ব আয়ও লক্ষণীয়ভাবে হ্রাস পেয়ে চলেছে। এ বিষয়টি অর্থমন্ত্রী ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে এবং অর্থমন্ত্রী এটি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন। বাজেট পাসের পর প্রয়োজনে এসআরও জারির মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগ নেবেন বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ৮৭০ সদস্যের জাতীয়ভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন বারভিডা সরকারকে বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বারভিডা দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী খাত। ব্যক্তি পর্যায়ে আয়কর, শুল্ক ও মূসক দেওয়ার মাধ্যমে দেশে করকাঠামো তৈরিতেও বারভিডা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানির মাধ্যমে বিশেষ অবদান রেখে আসছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০