Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 10:21 am

বাজেটে তামাক পণ্যে কর বাড়াতে উদ্যোগ নিন

তামাক একটি ক্ষতিকারক পণ্য। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম মাত্রায় হুমকি তৈরি করে থাকে। কাজেই তামাক পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক। আর তামাক পণ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকরী উদ্যোগ হিসেবে পরিচিত কর বাড়ানো। তামাক পণ্যে কর বাড়ানো হলে এর উৎপাদকরা যেমন চাপে পড়বেন, তেমনি কর বাড়ানোর ফলে তামাক পণ্যের দামও বেড়ে যাবে। এতে করে ধূমপায়ী ও তামাক সেবীরা এটির ব্যবহার কমিয়ে দেবেন বাড়তি খরচ বাঁচানোর জন্য। কাজেই আগামী বাজেটে তামাক পণ্যে যাতে কর বাড়ানো হয়, সে বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া আবশ্যক।

দৈনিক শেয়ার বিজে গতকাল ‘ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা: জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকজাত দ্রব্যে মূল্য ও কর বাড়াতে হবে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, একটি ওয়েবিনারে বক্তারা উল্লেখ করেছেন, তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করারোপে বর্তমানে প্রচলিত অ্যাড ভেলোরেম পদ্ধতি জটিল ও ত্রুটিপূর্ণ। ত্রুটিপূর্ণ এ করারোপ পদ্ধতির কারণে তামাকজাত দ্রব্যের দাম বাড়লেও তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা কাক্সিক্ষত হারে কমছে না। আবার তামাক কোম্পানি সর্বোচ্চ মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রি করে বছরে প্রায় চার হাজার ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। ফলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ত্রুটিপূর্ণ তামাক কর ব্যবস্থাকে একটি গ্রহণযোগ্য নিয়মের মধ্যে আনতে ও রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ করতে অতি দ্রুত একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়ন করতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের এ মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে উন্নীত হতে হলে এর কর কাঠামোতে ইতিবাচক সংস্কার আনতেই হবে। বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। সেই রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হলে তামাক পণ্যকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে হবে। যাতে করে মানুষ ধূমপান কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে সিগারেট ও তামাক পণ্য সবচেয়ে সস্তা। যে কারণে মানুষ হরহামেশা সিগারেট সেবন করে থাকে। এর ফলে বাড়ছে অসংক্রামক রোগ। বিশেষ করে ধূমপানের কারণে ফুসফুসের ক্যানসার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী, তামাক সেবনজনিত কারণে দেশে প্রতিবছর মৃত্যুবরণ করছে এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ। এটি এমন মৃত্যু, যা নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব। আর সে কারণেই তামাক পণ্য নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া আবশ্যক। সে ক্ষেত্রে তামাক পণ্যের দাম ও কর বাড়াতে হবে। আগামী ৬ জুন জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত হতে চলেছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট। এ বাজেটে যাতে তামাক পণ্যের কর বাড়ানো হয়, সে বিষয়ে সংসদ সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সজাগ হবেন বলেই বিশ্বাস।