নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আসায় আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের প্রধান উৎস রপ্তানি খাতের প্রস্তাবনার প্রতিফলন পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)। গতকাল সোমবার ইএবি থেকে পাঠানো এক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইএবি জানায়, শিল্প টিকে থাকলে রাজস্ব আসবে, নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। গত অর্থবছরে আমাদের পোশাক রপ্তানি ছিল ৪৭ বিলিয়ন ডলার, ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি। সরকারের অব্যাহত সহযোগিতায় আমরা রপ্তানি বাড়াতে পারলে কর হার না বাড়িয়েও রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব।
এতে অর্থনীতি বেশ উপকৃত হবে। তাই ২০২৯ সাল পর্যন্ত পোশাক ও বস্ত্র খাতের চলমান সব নীতি সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং বিকল্প নীতি সহায়তা প্রবর্তন না করা পর্যন্ত যেন চলমান নীতি সহায়তাগুলো কাটছাঁট না করা হয়, সেই দাবি জানায় ইএবি। একইসঙ্গে বাজেটে রপ্তানি শিল্পের জন্য সহায়ক কিছু নীতি সহায়তার জন্য প্রস্তাব করছে সংগঠনটি।
ইএবির প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছেÑউৎসে কর ০.৫ শতাংশে নামিয়ে আনা, রপ্তানি খাতে নীতি সহায়তার ওপর আয়কর অব্যাহতি, শিল্পের জন্য সব পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও পরোক্ষ কর প্রত্যাহার,
বিকল্প সহায়তার ব্যবস্থা করা, অগ্নি ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম পুনঃস্থাপনের ক্ষেত্রে আমদানির ওপর কর রেয়াত, পোশাকশিল্পের ঝুট বা বর্জ্য সংগ্রহের ওপর ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা, রিসাইকেল ফাইবার সরবরাহের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা, এইচএস কোড ভুল হলে ২০০ থেকে ৪০০ শতাংশ জরিমানার বিধান প্রত্যাহার করা, সোলার প্যানেল আমদানিতে শুল্কহার শূন্য করা, ব্যাংক সুদের উৎসে করহার কোম্পানি করদাতার জন্য ১০ শতাংশ রাখা, ব্যাংক সুদ সহনীয় পর্যায়ে রাখা, রপ্তানিমুখী শিল্পে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি দেয়া, পোর্ট চার্জ কমানো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলোকে বিশেষ নীতি সহায়তা ও অর্থায়ন সুবিধার আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া মাংস প্রক্রিয়াজাত এবং রপ্তানি প্রসারের জন্য কিছু সুপারিশ করেছে ইএবি। হিমায়িত চিংড়িতে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়া, হিমায়িত মাছ রপ্তানিতে নগদ সহায়তা ১০ শতাংশ দেয়া, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে নীতি সহায়তা দেয়া, রাসায়নিকে ভ্যাট কমানো, বাইসাইকেল রপ্তানি সহজ করতে কাঁচামাল আমদানি সহজ করা, শিল্প ও অর্থনীতির স্বার্থে জ্বালানির দাম স্থিতিশীল ও সহনীয় রাখার সুপারিশ করেছে ইএবি।