নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: আরও দুই মাস পরে রোজা। আর রোজা আসার আগেই চট্টগ্রাম মহানগরীর খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা সরবরাহ সংকটের অজুহাতে ছোলার দাম কেজিতে বাড়িয়েছেন ১০ থেকে ১৫ টাকা। এর প্রভাবে খুচরা বাজারের প্রতিকেজি ছোলা ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম।
গত শনিবার খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আড়তগুলোয় এখন অস্ট্রেলিয়ান ছোলা রয়েছে। মানভেদে প্রতিমণ ছোলা বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৫৪৫ থেকে তিন হাজার ৬৫৭ টাকা। অর্থাৎ প্রতি মণে ৩৭ দশমিক ৩২ কেজি হিসাবে প্রতি কেজির পাইকারি মূল্য ৯৫ থেকে ৯৮ টাকা পড়ছে। অথচ এক মাস আগেও একই মানের ছোলা কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৮২-৮৩ টাকায়। মাস ব্যবধানে বেড়েছে কেজিতে ১৩ থেকে ১৫ টাকা। আর সাদা মটরের কেজি এখন ৬০ থেকে ৬২ টাকা। অথচ ১৫ দিন আগেও দাম ছিল ৫০ থেকে ৫২ টাকা। বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা।
আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, ‘এখন চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ছোলা আসছে পাঁচ থেকে ১০ কনটেইনার। আগে এই সময়ে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ কনটেইনার খালাস হতো। যে ছোলা আমদানি হচ্ছে, সেগুলো কয়েকজন মিলে কিনে নিচ্ছেন। ফলে বাজারে সংকট আছে।’
অপরদিকে চকবাজার কাচাঁবাজার বিকে স্টোরের ম্যানেজার সুজন কুমার বলেন, কয়েক দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে। আমাদের কাছে নতুন ছোলা অস্ট্রেলিয়ান ১১০ টাকা ও পুরোনো ছোলা (অস্ট্রেলিয়ান) ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে বেশি ছোলা আমদানি হয়। পাশাপাশি পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, রাশিয়া, ইউক্রেন, ভারত, তানজানিয়া, মিয়ানমার ও কানাডা থেকে ছোলা আমদানি করেন আমদানিকারকরা। দেশে প্রতিবছর ছোলার বাার্ষিক চাহিদা এক লাখ ৪০ হাজার টন। এ বিষয়ে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, রোজা শুরুর কয়েক মাস আগে বিভিন্ন অজুহাতে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা, যাতে রোজার সময় প্রশাসনের চাপে বাধ্য হয়ে দাম কমিয়ে দিতে মুনাফা ঠিকই করে ফেলছেন। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, আগের কেনা দাম অনেক কম।
চট্টগ্রামের ছোলা ও ভোগ্যপণ্যের বড় এক আমদানিকারক শেয়ার বিজকে বলেন, এখন এলসি খোলা হয়নি। সবাই মাত্র এলসি খুলছে। আমাদের আমদানি করতে হলে ওই দাম হিসাব করে দেশে ছোলা আমদানি করতে হবে। সুতরাং সেই হিসাবে পাইকারিতে ৯০ টাকা কেজি পড়বে।