লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে সাকিবের বাবার আয় অনেক কমে গেছে। তার অন্য দুই সন্তান, যারা ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে কাজ করে, তারা এখন সংসারে টাকা দিচ্ছে। তারপরও অপরিহার্য জিনিসগুলো কিনতেই হিমশিম খাচ্ছে তারা। উপার্জনের প্রায় সব রাস্তাই বন্ধ হয়ে গেছে।
চাপের মুখে: বাংলাদেশের প্রলম্বিত আদালতের কর্মকাণ্ড কভিড-১৯ মহামারির কারণে ভীষণভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তাই জনাকীর্ণ পরিবেশে এই ডিটেনশন কেন্দ্রগুলোয় দ্রুত কভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়তে পারে, এ আশঙ্কার কারণে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি গত ৯ মে অধ্যাদেশ জারি করে ভার্চুয়াল আদালত চালু করার নির্দেশ প্রদান করেন, যার ফলে অল্প কিছু দিনের ভেতরেই শিশুদের জন্য দেশের প্রথম ভার্চুয়াল আদালত যাত্রা শুরু করেন।
ঝামেলামুক্ত থাকা: জামিন প্রক্রিয়ার ব্যবস্থাপনার জন্য ইউনিসেফ ডিটেনশন কেন্দ্রগুলোকে সহযোগিতা প্রদান করে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের সঙ্গে একযোগে কাজ করে ইউনিসেফ শিশুদের তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের ব্যবস্থাসহ এও নিশ্চিত করে থাকে যে, তাদের কেউ যেন সঙ্গে করে নিয়ে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
এছাড়া পরিবারের সঙ্গে একত্রীকরণসহ ইউনিসেফ নানাভাবে সহযোগিতা করে থাকে, যেমনÑস্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, আইনগত ও সামাজিক-মনস্তাত্ত্বি¡ক সহযোগিতা, সহিংসতা প্রতিরোধ ও সাড়া দেওয়া এবং শিক্ষা প্রভৃতি সাকিবের বাবার সহযোগিতা।
ডিটেনশন কেন্দ্রের মনঃসামাজিক স্বাস্থ্য কাউন্সেলর শরীফুল ইসলাম বলেন, শিশুরা মুক্ত হওয়ার পরে এখানকার কর্মীরা ফোন করে তাদের ভালো-মন্দ সম্পর্কে খোঁজ নেন।
মুক্ত হয়ে এই শিশুরা আবার কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তে পারে কি না, তা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই শিশুদের খুবই গৌণ অভিযোগের ভিত্তিতে এখানে এনে রাখা হয়। তাই তাদের ভেতরে অপরাধমূলক প্রবণতা কম।
শরীফ মনে করেন, যারা জামিনে মুক্ত হচ্ছে, তারা আবার আইন ভঙ্গ করবে কি না, সেটা আসলে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি নয়; বরং কভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষাপটে এখানে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হয়েছে, তা তারা বাড়িতে মেনে চলবে কি না, সেটাই আসল চিন্তার বিষয়।
তিনি বলেন, আমার দুশ্চিন্তা হচ্ছে বাড়িতে ফেরার পর তারা একইভাবে শৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে কি না।
ইউনিসেফের তথ্য অবলম্বনে