বাড়িমালিকদের সদয় হতে ওবায়দুল কাদেরের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস সংকটের এ সময়ে ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে বাড়ির মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অনেক বাড়িওয়ালা সংকটে আয় কমে যাওয়া ভাড়াটিয়াদের বাসা ছাড়তে বাধ্য করছেন বলে খবর শুনে গতকাল নিজের বাসা থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনেকের মালপত্র ছুড়ে ফেলে দেওয়ার মতো সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। মেসে অনেক শিক্ষার্থীর মালপত্রও ফেলে দেওয়া হয়েছে। সংকটে অনেকের আয় কমেছে। অনেকে হারিয়েছেন চাকরি। কেউ কেউ পরিবার নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছেন, প্রকাশ করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের একে অপরের সমব্যথী হতে হবে। বিপদ-আপদে অন্যের সহযোগী ও সহমর্মী হওয়া আমাদের ঐতিহ্য। আমি বাড়ির মালিকদের অনুরোধ করব, আপনারা পরিস্থিতি বিবেচনায় একটু সহনশীল হোন, মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।

বাড়িওয়ালাদের অনুরোধ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ কথা সত্য যে, কোনো কোনো বাড়িওয়ালা আছেন ভাড়া থেকে প্রাপ্ত আয়ই তাদের একমাত্র উৎস। আবার তার ওপর ব্যাংক লোনও থাকতে পারে। তাই আমি পরিস্থিতি বিবেচনায় দু’পক্ষকে ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে মানবিক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এই সংকটকালে ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখারও আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের অধিকাংশ ঋণগ্রহীতা প্রান্তিক ও নি¤œ আয়ের জনগোষ্ঠী। করোনার আকস্মিক অভিঘাত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আয় ও জীবনযাপনে ফেলছে নেতিবাচক প্রভাব। অনেকেই এখন সঞ্চয় ভেঙে চলেছে। ঋণগ্রহীতাদের কেউ কেউ কিস্তি দিতে হিমমিশ খাচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার অর্থনীতির প্রতিটি খাতকে চাঙা রাখতে বাজেটে প্রণোদনাসহ নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ঋণগ্রস্ত মানুষের ওপর এ সময় কিস্তির বাড়তি চাপ আপাতত কিছুদিনের জন্য কমাতে কিংবা বন্ধ রাখতে আমি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ এনজিওবিষয়ক ব্যুরো এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি ছোট ছোট এনজিওগুলো পড়েছে তহবিল সংকটে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সমন্বয় করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে পোশাক খাতসহ শ্রমঘন শিল্পগুলোর শ্রমিকদের ঈদুল আজহার ছুটি পর্যায়ক্রমে দেওয়ার পরামর্শও দেন কাদের। পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্যও মালিকদের আহ্বান জানান তিনি।

কোরাবানির পশুর হাট যেন সংক্রমণের কেন্দ্র না হয়ে ওঠে, সেজন্য কার্যকর পরিকল্পনা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কোরবানির পশুবাহী যানবাহন সাধারণত ধীরগতিতে চলে। এ সব পরিবহন মহাসড়কে নষ্ট হয়ে পড়লে তৈরি হয় যানজট। তাই ফিটনেসবিহীন যানবাহনে কোরবানির পশু পরিবহন থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

সড়ক মহাসড়কের ওপরে কিংবা পাশে পশুর হাট বসানো যাবে না বলেও হুশিয়ার করে দেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী। ঈদুল আজহার তিন দিন আগে থেকে সড়ক-মহাসড়কে ট্রাক, কভার্ডভ্যান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়ার কথাও জানান তিনি। তবে কৃষি শিল্প ও রপ্তানিমুখী পণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ত্রাণ, জ্বালানি, ওষুধ, খাদ্যদ্রব্য পচনশীল পণ্যসহ জরুরি সার্ভিসের আওতামুক্ত থাকবে।

ঈদের সময় সড়ক-মহাসড়ক-সংলগ্ন সিএনজি স্টেশনগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখতেও জ্বালানি বিভাগকে অনুরোধ করেন ওবায়দুল কাদের। ঈদ উদ্যাপনে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদকেন্দ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে অসংখ্য মানুষের জীবন-জীবিকা সংযুক্ত। সেজন্য অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। তা না হলে ভয়ঙ্কর ঝুঁকিতে পড়ব আমরা।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০