Print Date & Time : 28 June 2025 Saturday 4:22 am

বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে সতর্ক করল ডব্লিউটিও

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ছয় বছরের মধ্যে বৈশ্বিক বাণিজ্যে সবচেয়ে দ্রুত প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বার্ষিক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। এছাড়া চলতি বছরজুড়েই প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে। তবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যে নিয়ে পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের পদক্ষেপের ফলে সৃষ্ট বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কার কারণে এ ভালো খবর বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে সংস্থাটি। খবর বিবিসি, এএফপি।

ডব্লিউটিওর প্রধান রবার্টো আজিভেদো বলেছেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যেভাবে পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের প্রতিযোগিতা চলছে তা বাণিজ্যযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এর ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত মাসের প্রথম দিকে ইস্পাত আমদানিতে ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে চলতি বছরের শুরুতেই ওয়াশিং মেশিন ও সৌর প্যানেলের ওপরও শুল্কারোপ করা হয়। মূলত চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির কথা মাথায় রেখেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর ফলে বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কা সৃষ্টির পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, বাণিজ্য যুদ্ধ ভালো এবং এতে সহজেই জেতা যায়।

এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্কারোপ করে। এছাড়া ডব্লিউটিওর কাছে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও হুমকি দেয়। এ নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি বিশ্ববাণিজ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এরপরও একের পর এক পাল্টপাল্টি শুল্কারোপ করছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ দুটি।

আজিভেদো বলেছেন, বিশ্ববাণিজ্যের এ শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় থাকাটা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও পুনরুদ্ধার এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিভিন্ন দেশের সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণমূলক বাণিজ্যনীতি বজায় রাখলে এ গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি হুমকির মুখে পড়বে।

এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে কোনো বিরোধ দেখা দিলে সব পক্ষকেই সংযত থাকতে হবে। এসব সমস্যা সমাধানে আলোচনা ও সমন্বিত পদক্ষেপের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

ডব্লিউটিওর অর্থনীতিবিদদের মতে, চলতি বছর বিশ্ববাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি হতে পারে চার দশমিক চার শতাংশ। অর্থনৈতিক সংকটের পর থেকে চলমান গড় প্রবৃদ্ধি তিন শতাংশের তুলনায় এ হারকে বেশ ভালো বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ১৯৯০ এর দশকের গড় প্রবৃদ্ধি চার দশমিক আট শতাংশের তুলনায় চলতি হার এখনও পিছিয়ে রয়েছে।

সংস্থাটির বার্ষিক বাণিজ্য রিপোর্টে বলা হয়েছে, করারোপের নীতির কারণে এ প্রবৃদ্ধির হার এখন কমে যাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এমনকি ২০১৯ সালে বিশ্ববাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি চার শতাংশে নেমে আসতে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর অর্থনৈতিক নীতি কঠোর করার বিষয়েও সতর্ক দিয়েছে ডব্লিউটিও। বিশেষ করে সুদের হার দ্রুত বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড ইতোমধ্যে জানিয়েছে, আগের চিন্তার চেয়েও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুদের হার বৃদ্ধি করা হবে। যুক্তরাজ্যে আগামী মাসের শুরুর দিকেই সুদের হার বৃদ্ধি করা হতে পারে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।